)
কিডজ

নীল কোট লাল কোট

Byরানাকুমার সিংহ

একদিন সেই দুই বালক বড় হলো। নিজেদের ঘর বানালো একে অপরের মুখোমুখি করে, যাতে মন চাইলেই দুজন কথা বলতে পারে। দুই ঘরের মাঝে ছিল একটিমাত্র ছোটপথ, এটা দিয়ে তারা চলাচল করতো।

সেই গ্রামে ছিল এক চালাক লোক, সে তাদের বন্ধুত্ব পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো। পরীক্ষা করার জন্য সে দুই রঙের একটি কোট পরলো। কোটটির একপাশ ছিল নীল, আর অন্যদিকটা ছিল লাল।

চালবাজ লোকটা এই কোট পরে দুই বন্ধুর বাড়ির মাঝখানে সরুপথ ধরে হাঁটতে থাকলো। দুইবন্ধু তখন বাড়িতেই ছিল। লোকটা সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় যথেষ্ট গোলমাল করল যাতে দুইবন্ধু তার দিকে তাকায়।

এটা দেখে এক বন্ধু অন্যজনকে বলল, ‘গোলমাল করা লোকটা সুন্দর লাল কোট পরে ছিল’।

‘না, সেটি নীল কোট ছিল’, অন্য বন্ধু উত্তর দিল।

‘তার কোট লাল ছিল। লোকটাকে স্পষ্ট দেখতে পেলাম যখন সে আমাদের পথ দিয়ে হাঁটছিল!’- প্রথম বন্ধু বলল।

‘তুমি ভুল বলছ। এটা নীল ছিল’, অন্য বন্ধুটি বলল।

‘আমি জানি আমি কী দেখেছি!’-প্রথম বন্ধুটি জোর গলায় তার বন্ধুকে বলল।

‘এটা নীল ছিল! তুমি কিছুই জানো না।’-  দ্বিতীয় বন্ধু রাগে গরগর করে উত্তর দিল।

লোকটার কোট নীল ছিল না লাল ছিল তারা এই নিয়ে বারবার তর্ক করতে থাকল। একে অপরকে অপমান করা শুরু করল। অবশেষে দুজন তো মারামারিই শুরু করে দিলো।

ঠিক তখনই, লোকটা ওখানে এসে দুজনের মুখোমুখি হলো। তখনও দুইবন্ধু একে অপরকে ঘুষি ও লাথি মারছিল এবং চিৎকার করছিল- ‘আমাদের বন্ধুত্ব শেষ হয়ে গেছে!’

লোকটা তাদেরকে তার কোট দেখাল। সে তাদের এমন নির্বোধ লড়াইয়ে হাসাহাসি শুরু করল। দুই বন্ধু অবাক চোখে দেখে লোকটার কোট একদিকে নীল এবং অন্যদিকে লাল।

দুই বন্ধু লড়াই বন্ধ করলো এবং চিৎকার করে লোকটাকে বলল, ‘আমরা সারাজীবন ভাইয়ের মতো পাশে ছিলাম এবং তোমার কারণে আমরা লড়াই করলাম। তুমি আমাদের বন্ধুত্বের মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছ’।

‘এটার জন্য আমাকে দোষ দেবে না। আমি তোমাদের লড়াই বাঁধাইনি। তোমরা দুজনই ভুল এবং দুজনই ঠিক। হ্যাঁ, তোমরা প্রত্যেকে যা দেখেছিলে তা সত্য ছিল। তোমরা লড়াই করেছ, কারণ তোমরা শুধু তোমাদের নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে আমার জামার দিকে তাকিয়েছো।’-লোকটা উত্তর দিলো।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!
SCROLL FOR NEXT