অর্থনীতি

জ্বালানি তেল: এ বছরেই ছাড়াতে পারে ১০০ ডলার

Byনিউজ ডেস্ক

রয়টার্স লিখেছে, সদ্য সমাপ্ত বছরের শেষ দিকে ওমিক্রনের দাপটে কোভিড শনাক্তে উল্লম্ফন ঘটেছে। এরপরও তেলের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। অথচ ২০২০ সালে মহামারীর শুরুর দিকে বেশির ভাগ দেশ লকডাউনে যাওয়ায় তেলের চাহিদা তলানিতে নামে। তখন দামও পড়ে যায়।

তবে রেকর্ড গড়ে নতুন সংক্রমণের মধ্যে এখন পর্যন্ত অধিকাংশ দেশ কঠোর বিধিনিষেধে যেতে অনাগ্রহী হওয়ায় তেলের চাহিদা কমার সম্ভাবনা নেই। চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহের সক্ষমতা না থাকায় এ বছর দাম বেড়ে যাবে বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়।

বুধবার ব্রেন্ট অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৮৪ ডলারে, যা গত দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ফরেক্স কোম্পানি ওয়ান্ডার এর জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক জেফ্রি হ্যালিক বলেন, মনে হচ্ছে চীন অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতি সেভাবে কমাবে না, আসলে ওমিক্রনের দাপট কমে যাচ্ছে। আর ওপেক প্লাসের উৎপাদন বাড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।

“আমি তো প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১০০ ডলার না ছাড়ানোর কোনো কারণ দেখছি না।”

তবে ওমানের তেলমন্ত্রী মোহাম্মদ আল রুমহি মঙ্গলবার ব্লুমবার্গকে বলেন, “আমরা ব্যারেল প্রতি দাম ১০০ ডলার দেখতে চাই না। এমন দামে তেল কিনতে বিশ্ব প্রস্তুত নয়।”

অথচ কিছুদিন আগের চিত্রও ছিল ভিন্ন। কোভিড মহামারী শুরুর পর একের পর এক দেশে লকডাউন শুরুর পর বিশ্ব বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে। চাহিদা কমে যাওয়ায় তেলের দাম একেবারে তলানিতে নামে।

পরে ডেল্টার প্রাদুর্ভাব কমলে লকডাউন উঠে গেলে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে শুরু করে যা ২৭ অক্টোবর ৮৫ ডলার ছাড়ায়, যা সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৪ সালের পর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এতটা বাড়েনি। আর ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের জুনের মধ্যে তেলের দাম একশ ডলারের মধ্যে উঠানামা করে। ২০১৪ সালের মে মাসেও দর ১০০ ডলার ছিল, যা পরের মাসে হঠাৎ করেই কমে যায়।  

বুধবার রয়টার্স লিখেছে, ২০২০ সালে মহামারীতে চাহিদা তলানিতে নামার পর তেল উৎপাদন সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি তেলের রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক এবং তাদের সহযোগীদের নিয়ে গঠিত জোট ওপেক প্লাস। কোভিড পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার আশঙ্কায় ছোট উৎপাদনকারীদের অনেকেই সরবরাহ বাড়ানোর সাহস পাচ্ছেন না।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামের বিষয়ে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মরগান স্ট্যানলি পূর্বাভাস দিয়েছে, এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিক নাগাদ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে। সীমিত উৎপাদন ক্ষমতা আর স্বল্প বিনিয়োগের কারণে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।

দাম বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে স্টান্ডার্ড চার্টার্ডও। ২০২২ সালে ব্রেন্টের দাম ৭ থেকে ৭৫ ডলারের মধ্যে থাকবে। আর পরের বছরে ১৭ থেকে ৭৭ ডলারের পূর্বাভাস দিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংকটি।

অপরদিকে আর্থিক খাতের আরেক বড় কোম্পানি জেপি মরগানের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এ বছর নাগাদ তেলের দাম ৯০ ডলারে উঠবে।

SCROLL FOR NEXT