অর্থনীতি

দুর্দশা কাটাতে সহায়তা চায় হস্তান্তরিত বস্ত্রকলগুলো

Byফয়সাল আতিক

হস্তান্তর চুক্তি অনুযায়ী সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

অচলাবস্থা নিরসনে বার বার পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্ত হয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ শ্রমিক-কর্মচারীদের।

বুধবার বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের সভাপতি জেড এম কামরুল আনামের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট কারখানার ব্যবস্থাপকরা শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দুরবস্থার কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালের ২১ মার্চ বস্ত্র খাতের ৯টি প্রতিষ্ঠানকে শ্রমিক-কর্মচারীদের ব্যবস্থাপনায় হস্তান্তর করেছিলেন।

রাজধানী ঢাকা ছাড়াও পাশের গাজীপুর ও চট্টগ্রামে এসব কারখানা অবস্থিত।

গাজীপুরের নিউ অলিম্পিয়া টেক্সটাইলের বর্তমান পরিচালক হাসানুজ্জামান মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কারখানার স্পিনিং মেশিনগুলো ১৯৫৪ মডেলের। আধুনিক মেশিন কিনতে আইনি জটিলতা থাকায় স্পিনিং শাখা বন্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। আর স্বল্প পরিসরে ডাইং বিভাগটি চালু আছে।

“সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২৫ কোটি টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও আমরা পরিশোধ করতে পারিনি। এখন নতুন করে সুদসহ ২৬ কোটি টাকা পরিশোধের প্রস্তাব নিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে আলাপ-আলোচনা চললেও তা শেষ হয়নি। কারখানার কোনো কাগজপত্র আমাদের নামে না হওয়ায় কোনো বিনিয়োগকারী পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকের ঋণও পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবেই ধীরে ধীরে রুগ্ন হয়ে পড়েছে এই বস্ত্রকল।”

চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে ২.৫২ একর জমিতে গড়ে ওঠা মডার্ন পাইলন ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মাজেদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হস্তান্তর চুক্তি অনুযায়ী চার কোটি টাকা পরিশোধ করলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনও অনাপত্তিপত্র হাতে পাননি তিনি। ফলে কারখানার মূল উপাদান নাইলন সূতার কাঁচামাল আমদানি করতে পারছেন না তিনি।

“২০০৮ সালের মধ্যেই সব পাওনা পরিশোধ করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাগজপত্র হাতে পাইনি। দীর্ঘদিন ধরে শুধু লোকসানই গুণে যাচ্ছি,” বলেন মাজেদ।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নিউ ঢাকা কটন মিলসের প্রতিনিধি আবুল কাসেম পাটোয়ারী ও মোখলেছুর রহমান, নিউ অলিম্পিয়া টেক্সটাইলের প্রতিনিধি মতিউর রহমান, নিউ মেঘনা টেক্সটাইলের প্রতিনিধি নূরুল ইসলাম ও জাহিদ আল মামুন, নিউ মুন্নু ফাইন কটন মিলসের প্রতিনিধি মিজানুর রহমান ও হারুনুর রশিদ, মডার্ন পাইলন ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিনিধি আব্দুল মাজেদ চৌধুরী এবং মডার্ন ন্যাশনাল কটন মিলের প্রতিনিধি মো. সফি ও কানু রাম বৈদ্য।

তারা শিল্পমন্ত্রীকে বলেন, ২০১৪ সালের অক্টোবরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বস্ত্রকলগুলো সুষ্ঠু পরিচালনার স্বার্থে কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেগুলো এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে কারখানার পরিচালকরা পুরনো যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করে নতুন কিনতে পারছেন না। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র না পাওয়ায় ব্যাংক ঋণের সুবিধাও পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।

শিল্পমন্ত্রী আমু তাদের কথা শুনে সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত আকারে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “আপনারা যা বলতে চাচ্ছেন, তা লিখিত আকারে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে যান। তাহলে সে অনুযায়ী যে মন্ত্রণালয়ে কথা বলার প্রয়োজন হয়, আমি বলব।”

SCROLL FOR NEXT