)
ক্রিকেট

সেঞ্চুরি ৫টি, নব্বইয়ে আউট ৬ বার, তবু আক্ষেপ নেই পান্তের

Byক্রীড়া প্রতিবেদক

মেহেদী হাসান মিরাজের জোরের ওপর করা ডেলিভারি সামনের পায়ে ভর দিয়ে অফ সাইডের দিকে খেলার চেষ্টা করেন রিশাভ পান্ত। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে। আরও একবার নব্বই ছুঁয়ে সেঞ্চুরির আগে থামে পান্তের ইনিংস। তবু এটি নিয়ে কোনো হতাশা নেই বলেই দাবি এই কিপার-ব্যাটসম্যানের।

আউট হওয়ার পর এক মুহূর্ত আকাশপানে চেয়ে নিজের আক্ষেপটাই হয়তো প্রকাশ করেন পান্ত। পরে আর মাথা নিচু হয়নি তার। স্রেফ ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও, মাথা উঁচু রেখেই ড্রেসিংরুমে ফেরেন ২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। তখন তার চোখে মুখে যেন ১৫৯ রানের জুটিতে দলকে বিপদমুক্ত করার প্রশান্তি।

মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৯৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ভারত। সেখান থেকে শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে মিলে পাল্টা আক্রমণে দলকে নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যান। পাঁচ নম্বরে নেমে সহজাত ব্যাটিংয়ে ৭ চার ও ৫ ছয়ে ১০৪ বলে ৯৩ করে আউট হন পান্ত।

৩৩ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ষষ্ঠবার নব্বইয়ে আউট হলেন পান্ত। এই ছয় ইনিংসকে তিন অঙ্কে নিতে পারলে এরই মধ্যে তার সেঞ্চুরি হতে পারত ১১টি। কিন্তু এখন ৫ সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটির সংখ্যা ১১টি।

কিপার-ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসেই এখন পান্ত এখানে সবার ওপরে। ৫ বার নব্বইয়ে আটকা পড়ে আগের রেকর্ড ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির।

তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে ব্রডকাস্টারদের সঙ্গে কথোপকথনে পান্ত বলেন, ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলের প্রাপ্তিই বেশি থাকে তার ভাবনায়।

“এটি (নব্বইয়ে আউট) আসলে হয়ে যায়। আর কোনো ব্যাখ্যা নেই। আমি কখনও মাইলফলক নিয়ে ভাবি না। আমার কাছে দলের হয়ে প্রভাব রাখতে পারাই মূল ব্যাপার। যদি (সেঞ্চুরি) হয়, তাহলে হলো। বেশি কিছু ভাবি না।”

সেঞ্চুরি করতে না পারার হতাশার চেয়ে বরং শ্রেয়াসের সঙ্গে জুটিতে দলকে লিড এনে দেওয়ার তৃপ্তি পান্তের কণ্ঠে।

“ব্যক্তিগত দিক থেকে আমি খুশি। কারণ আমি জানি যে, ভালো খেলছিলাম। আমি হয়তো সুযোগটা কাজে লাগাতে পারতাম। তা হয়নি। সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া হলো। তবে শ্রেয়াসকে (আইয়ার) নিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করতে পেরেছি। এতেই খুশি।”

উইকেটের সামনে যেমন কথা বলে তার ব্যাট, উইকেটের পেছনে তেমনি উচ্চকিত থাকে তার কণ্ঠ। সরব উপস্থিতিতে মাঠ উজ্জীবিত রাখেন তিনি। বোলারদের নিয়মিত নানা পরামর্শ দিতে দেখা যায় তাকে। শুধু কথা বলাই নয়, কিপিংয়ের মূল কাজেও বেশ পারদর্শী তরুণ এই কিপার।

টেস্ট ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত পান্তের গ্লাভসে জমা পড়েছে ১৩২ ডিসমিসাল। তার অভিষেকের পর থেকে বিশ্বের আর কোনো উইকেটরক্ষক ডিসমিসালের সেঞ্চুরি করতে পারেননি। 

পান্ত বললেন, ব্যাটিংয়ের মতো কিপিংও তিনি উপভোগ করেন দারুণভাবে।

“উইকেটকিপিং করা আমাকে সাহায্য করে। পেছন থেকে ভালোভাবে কন্ডিশনটা বুঝতে পারি। কিপিং করায় আমার অনেক বেশি আগ্রহ। এটি আমার ক্রিকেটীয় যাত্রারই একটি অংশ।”

SCROLL FOR NEXT