বাণিজ্য

লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি ১৪৮ কোটি ডলার

Byআবদুর রহিম হারমাছি

দেড় মাস আগে অর্থবছর শেষ হলেও রোববার ব্যালেন্স অব পেমেন্টের হালনাগাদ যে তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বাংলাদেশের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪৮ কোটি (১.৪৮ বিলিয়ন) ডলার। যেখানে তার আগের বছরে ৩৭০ কোটি ৬০ লাখ (৩.৭০ বিলিয়ন) ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

পরিস্থিতি বদলের জন্য বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেশ কিছু দিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় আমদানি খরচ কম হচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তেলের দাম বাড়ায় পরিস্থিতি বদলেছে।”

২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল (প্রায় ১৫৯ লিটার) অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ ডলার। এখন তা ৫৬ থেকে ৬০ ডলারে ওঠানামা করছে।

জ্বালানি তেল আমদানিতে খরচ বৃদ্ধি ছাড়াও পদ্মা সেতুসহ বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ চলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে শিল্পের জন‌্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যস্ত্রপাতির আমদানি। খাদ্যপণ্য (চাল ও গম) আমদানিতেও খরচ বাড়ছে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৯ শতাংশ। পক্ষান্তরে রপ্তানি আয় বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ১৬ শতাংশ।

 

তবে এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন বিআইডিএসের গবেষক জায়েদ বখত।

তিনি বলেন, “ক্যাপিটাল মেশিনারি ও কাঁচামাল আমদানি বাড়া মানে দেশে বিনিয়োগ বাড়া, অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হওয়া। সেটাই হচ্ছে।”

তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ) রয়েছে।

“তাই এখন আমদানি ব্যয় বাড়ায় তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

নিয়মিত আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। এই হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হল, নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, লেনদেন ভারসাম্যে ৩৭০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছর শেষে সেই উদ্বৃত্ত ১৪৮ কোটি ডলারের ঘাটতিতে পরিণত হয়েছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ২৮৭ কোটি ৫০ লাখ (২.৮৭ বিলিয়ন) ডলার।

SCROLL FOR NEXT