নাগরিক সংবাদ

রাস্তায় নতুন বাস

Byকবীর টুটুল

সকাল ৮টা ১৭ মিনিটে আমার মোবাইলে ম্যাসেজ এলো। আজ অফিসে যাওয়ার গাড়ী নাই। লিখেছেন অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আমি তখন ১০ নব্বর গোল চক্কর পার হয়ে ষ্টেডিয়ামের দিকে হাটছি। আমরা প্রতিদিন সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে মিরপুর স্টেডিয়ামের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে করে কারওয়ানবাজারে অফিসে যাই। তো কি আর করা। ঘুরে হাটা শুরু করলাম, রাস্তা পার হলাম। উদ্দেশ্য অরিজিনাল ১০। কারণ এর আগে বাস পাওয়া সম্ভব নয়। এরই মধ্যে রাস্তা পার হতেই দেখলাম একটি নতুন দুইতলা বাস দারিয়ে বিআরটিসি কাউন্টারে। গিয়েই টিকেট পেলাম। উঠলাম দুই তলায়। তখন সকাল ৮টা ২৪/২৫। একদম সামনের দিকে বামে দ্বিতীয় রো-তে বাম পাশে বসলাম। প্রতিটি রো-তেই বামে এবং ডানে ফ্যান দেয়া আছে এবং ফ্যানগুলো চলছে। একটু শান্তি পেলাম।

এরপর বাস চলা শুরু হলো ডানে রাস্তা কাটা-বামে রাস্তা কাটা। এর মধ্যে কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাস। ১০ নম্বর থেকে শ্যাওড়াপাড়া পার হতেই সকাল ৯টা ৩৪, অর্থাৎ প্রায় ১ ঘন্টা ১০ মিনিট পার হয়ে গেছে। শ্যাওড়াপাড়া পার হতেই একটু ফাঁকা। ডান পাশ দিয়ে একটি বিআরটিসির প্রথম আমলের দুইতলা বাস ওভারটেক করে চলে গেল এবং নির্বাচন কমিশনের সামনে গিয়ে ডান পাশ দিয়ে (রং রুটে) চলা শুরু করলো। বুঝলাম এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাস। রাস্তায় কোন জ্যাম থাকলেই ওরা ডান দিয়ে যায় এবং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক কন্ট্রোল করে চলতে থাকে। যাই হোক এর পর আবার বিজয় স্মরণীর জ্যাম। সিগনালে বসে চিন্তা করছি এত সুন্দর একটি বাস, কিন্তু কতদিন সেবা দিতে পারবে যাতায়াতে। কারণ এক সময়ের ভলভো ডবলডেকার বাসগুলো মতিঝিল-উত্তরা, মতিঝিল-মিরপুর, মতিঝিল-গাবতলী এবং মিরপুর-উত্তরা রুটের প্রধান বাহন ছিল। এখন সেগুলো স্মৃতির মনিকোঠায়। একসময় এই বাসগুলো নিয়ে কত লেখালেখি/রিপোর্ট হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শেষ পযন্ত ঢাকার রাস্তা থেকে উধাও। এই যে বাসগুলো আবার রাস্তায় যাত্রা শুরু করলো, এগুলো কতদিন আমাদের সেবা দিতে পারবে, কতদিন মানুষ জ্যাম/জট যাই হোক অন্তত বাসে উঠে অনির্দিষ্ট সময়ে হলেও অফিসে যাওয়ার নিশ্চয়তা পাবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা/কর্মচারীগন, আপনাদের কাছে অনুরোধ নতুন বাসের উদ্বোধন করেই দায়িত্ব শেষ করে দেবেন না। দয়া করে এগুলো রক্ষনাবেক্ষনেও আরও বেশি দায়িত্বশীল হবেন। এমনটাই প্রত্যাশা করি।

ছোটবেলায় একটা ছড়া পড়েছিলাম। বাসটি যাবে ফার্মগেট, মানুষেরা বাসের পেট, দত্যি যেন চলন্ত, মানুষগুলো ঝুলন্ত। আমরা এই কবিতাটি ভুলে যেতে চাই।

SCROLL FOR NEXT