আসমানের ওই উঁচুতে উহাদের বাস। উহাদের মানে শিমুল ফুলের আর পক্ষীকুলের। একদা ফাল্গুনের এই রকম শিমুল ফোটা প্রভাতে রাজধানীর রাস্তায় কতিপয় কিশোর-যুবক গুলিবিদ্ধ হইয়া লুটাইয়া পড়িয়াছিলো। কাহারও বুক, কাহারও মস্তক বিদীর্ণ করিয়া ছুটিয়া গিয়াছিলো বুলেট। উষ্ণ রক্তস্রোতে পথ ভাসিয়া গিয়াছিলো।
.
.
রক্তের দাগ মুছিয়া গিয়াছে। কবরের চিহ্নটুকুও আর নাই কাহারও কাহারও। শিমুলের রঙ বদলায় নাই। গোলাপের, পলাশের, শাপলার লালের সঙ্গে একাত্ম হইয়া শিমুলের এই লাল আমাদের ওই সকল অকুতোভয় ভাইয়ের গায়ের তাজা রক্তের লাল হইয়া ফুটিয়া থাকে; আসমানমুখী হইয়া বুঝি সেই দিনের স্মরণ মাগে! শিমুলের লাল পতাকার লাল হইয়া, বাংলাদেশ হইয়া বুক পাতিয়া রয়।
.
.
দিগন্তমুখী এই ফুলের নিকট পক্ষী আসিয়াছে এক। চকচকে চক্ষু তাহার। নিষ্পলক তাকায়। ওইখানে ক্ষুধার খাই খাই।
.
.
পক্ষী শিমুল ফুল খায়, ফুলের মধু খায়। উহার ঠোকরানো শেষ হইবার পূর্বেই ফুলের বক্ষ কেলিয়া চৌষট্টিচির হইয়া যায়। অতঃপর পক্ষী ফুল ছাড়িয়া উড়িয়া যায়।
ছবিগুলি ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদীন উদ্যান হইতে ধারণকৃত।