ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

)<div class="paragraphs"><p>ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।</p></div>
বাংলাদেশ

অন্য উপায় না থাকলেই কেবল গাছ কাটা হয়: মেয়র তাপস

Byনিজস্ব প্রতিবেদক

ধানমণ্ডিতে সড়ক বিভাজকের গাছ কাটার বিরোধিতার জবাব দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

তিনি বলেছেন, ‘অন্য উপায় না থাকায়’ উন্নয়ন কাজের জন্য এই গাছ কাটতে হচ্ছে। আর যত গাছ কাটা হবে, তার তিন গুণ লাগানো হবে।

রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সাত মসজিদ সড়কে সড়ক বিভাজক নতুন করে তৈরির মধ্যে গত কিছু দিন ধরেই সেখানে থাকা পুরনো গাছগুলো কাটা হচ্ছে।

পরিবেশবাদীসহ বিভিন্ন নাগরিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এই গাছ কাটার বিরোধিতা করছে। তারা নানা কর্মসূচিও পালন করছে।

বুধবার দুপুরে ‘ঐতিহ্য বলয়-৫’ এর যাত্রাপথ পরিদর্শনের সময় গাছ কাটা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র তাপস।

তিনি বলেন, “গাছ কাটা নিয়ে কেউ কেউ মর্মাহত হতেই পারেন, কষ্ট পেতেই পারেন। এটা তাদের আবেগের বিষয়। আবার অনেকেই ঢালাওভাবে অনেক কথা বলছেন। পূর্ণ তথ্য না নিয়েই কথা বলেন।

“আসলে উন্নয়ন কাজে অনেক সময় গাছ ফেলে দিতে হয়, কেটে ফেলতে হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু আমরা তখনই করি, যখন নিতান্তই আর কোনো উপায় নেই।”

সাত মসজিদ রোডে আবাহনী মাঠের সামনে পুরনো সড়ক বিভাজকে থাকা গাছ সোমবার রাতে কেটে ফেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মীরা

গাছ কাটা হলে সেখানে আগের চেয়ে বেশি গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত সিটি করপোরেশনের রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “উন্নয়ন কাজের প্রয়োজনে গাছ কাটতে হলে সেখানে নতুন করে তিন গুণ বেশি গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি একটা গাছ অপসারিত হয়, তাহলে সেখানে আমরা তিনটা গাছ লাগানোর লক্ষ্যে কাজ করছি। ওই সড়ক বিভাজকে আমরা আরও অনেক বেশি গাছ লাগাব।”

আসন্ন বর্ষা মৌসুমে প্রায় ১০ হাজার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান ঢাকা দক্ষিণের মেয়র।

উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়নের সময় নগর পরিকল্পনাবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকাকে অবশ্যই আমরা একটি সুন্দর, সবুজ নগরীতে পরিণত করব।”

‘ঐতিহ্য বলয়’

চারশ বছর পুরনো ঢাকাকে পর্যটকবান্ধব শহর হিসেবে গড়ে তুলতে ‘ঐতিহ্য বলয়’ তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এমন সাতটি বলয় সৃষ্টির পরিকল্পনা ধরে তারা এগোচ্ছেন বলে জানান মেয়র তাপস। মঙ্গলবার ৫ নম্বর বলয়ের যাত্রাপথ পরিদর্শন করেন তিনি।

তাপস বলেন, “ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে আমাদের ৫ নম্বর বলয় শুরু হবে। এটার নান্দনিকতা রয়েছে, স্থাপত্যশৈলী রয়েছে, তার সাথে সাথে ধর্মীয় আকর্ষণও রয়েছে। এরপরে রয়েছে লালবাগ কেল্লা।

“এরপর আরেকটি বলয় হল আমাদের আহসান মঞ্জিলকেন্দ্রিক। তারপর আরেকটি বলয় হল আমাদের রূপলাল হাউজকেন্দ্রিক, আরেকটি হলো বড় কাটরা ও ছোটকাটরা নিয়ে। এভাবে আমরা বিভিন্নভাবে সাতটি বলয় সৃষ্টি করছি। পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে আমরা সব বলয় সৃষ্টি করব। যেখানে একজন পর্যটক হেঁটে হেঁটে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই সে সকল স্থাপনা উপভোগ করতে পারে।”

পরিকল্পিত ঐতিহ্য বলয়-৫ পরিদর্শনে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই বলয় সৃষ্টির কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান মেয়র তাপস।

বুধবার মেয়রের সঙ্গে থাকা ইতিহাসের শিক্ষক মুনতাসীর মামুন বলেন, “আমি এর আগে কোনো মেয়রকে দেখিনি, যিনি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের উন্নয়ন নিয়ে আগ্রহী। এই প্রথম কোনো মেয়র হিসেবে ফজলে নূর তাপস আগ্রহ দেখিয়েছে।

“এই কাজে যদি আমরা সবাই সহযোগিতা করি এবং কাজটি আমরা সম্পূর্ণ করতে পারি, আমার মনে হয় ঢাকার ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর কাছে ফুটে ওঠবে।”

তাপস বলেন, “আমাদের প্রথম লক্ষ্য হল, ঢাকার যে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো রয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণ করা। দ্বিতীয়ত হল, দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা।

“আমরা বহির্বিশ্বে যেভাবে দেখি, ঐতিহ্যবাহী শহরগুলোতে যেমনি পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠে, আমরা চাই ঢাকা শহরের পর্যটন শিল্পও সেভাবে গড়ে উঠুক। পর্যটকরা ঢাকামুখী হোক।”

SCROLL FOR NEXT