বাংলাদেশ

নওহাটার মেয়রের কবর আজিমপুরে 

Byনিজস্ব প্রতিবেদক

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, গফুরের স্ত্রীর পরিচয় দেওয়া জান্নাতুন সালমা মিমের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে লাশ তুলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতারে নেওয়া হয়।

ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল হকের উপস্থিতিতে লাশ তোলা হয়। এ সময় রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

মিমের বরাত দিয়ে পরিদর্শক আজাদ বলেন, গত ৮ জানুয়ারি রাতে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে গফুরের লাশ দাফন করেন মিম। লাশ দাফনের সময় মিম নিজেকে গফুরের বোন ও হারুন তার ভগ্নিপতি পরিচয় দেন।

এর আগের দিন (৭ জানুয়ারি) রাতে মোহাম্মদপুরের মিমের বাসায় মেয়র গফুরকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন মিমের স্বামী হারুন অর রশিদ।

তার একদিন আগে মিম গফুরকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যান। এরপর সেখানে দুইদিন একটি ঘরে তাকে আটকে রাখা হয়। ওই দুইদিন তাকে কোনো খাবার দেওয়া হয়নি।

মিমের সামনে তার স্বামী মুখে বালিশ চাপা দিয়ে গফুরকে হত্যা করেন বলে জানান পরিদর্শক আজাদ।

আজাদ বলেন, চার দিনের হেফাজতে (রিমান্ড) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দ্বিতীয় দিন গত শনিবার রাতে মেয়র গফুরকে হত্যার কথা মিম স্বীকার করেন।

রিমান্ডের শেষ দিন সোমবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য মিমকে রাজশাহীর ম্যাজিস্ট্রে আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু আদালতে গিয়ে তিনি জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেন।

এরপর আদালত তার রিমান্ড আরও সাতদিন বর্ধিত করে।

আজাদ আরও জানান, মঙ্গলবার সকালে মিমকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। দুপুরে ঢাকায় পৌঁছে মিমকে নিয়ে আজিমপুর কবরস্থানে যান।

সেখানে মিম গফুরের কবর দেখিয়ে দেন বলে জানান আজাদ।

মামলার বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আজাদ জানান, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মেয়র আবদুল গফুর ঢাকার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। এরপর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

মাঝে ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি মেয়রের দুইটি ফোন নম্বর থেকে তার ছেলের মোবাইলে দুইটি এসএমএস আসে। ওই দুই এসএমএসের একটিতে ২৫ হাজার টাকা ও অপরটিতে ৫০ হাজার টাকা বিকাশে চাওয়া হয়।

আজাদ বলেন, দীর্ঘদিন যোগাযোগ বিছিন্ন থাকার পর এসএমএস করে বিকাশে টাকা চাওয়ার বিষয়টি সন্দেহ হলে ১৯ জানুয়ারি স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা পারুল পবা থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন।

এরপর থেকে তিনি বিষয়টি তদন্ত শুরু করেন বলে জানান।

এই তদন্ত কর্মকর্তা জানান, মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে মেয়রের ফোন নাম্বারের অবস্থান ৭ জানুয়ারি নওগাঁ ও তারপর থেকে ঢাকায় পাওয়া যায়।

এর সূত্র ধরে গত ২৩ জানুয়ারি ঢাকার সংসদ ভবন এলাকা থেকে মিমকে আটক করা হয়। আটকের পর মিম মেয়রের স্ত্রী বলে দাবি করেন।

এরপর ৩১ জানুয়ারি মিমের দুই বোন জান্নাতুন নাইম ও জান্নাতুন ফেরদৌসকে নওগাঁ ও ঢাকা থেকে আটক করা হয়।

মিমের বাবার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে। তার বিয়ে হয়েছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া গ্রামের এমাজ উদ্দিনের ছেলে হারুন অর রশিদের সঙ্গে। হারুন ঢাকায় একটি ক্লিনিকে চাকরি করেন।

SCROLL FOR NEXT