বাংলাদেশ

২০২২ হবে অবকাঠামো উন্নয়নের মাইল ফলক: প্রধানমন্ত্রী

Byনিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানার এই ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়

আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।

বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের স্তর থেকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে যেসব বড় অবকাঠামো প্রকল্প সরকার নিয়েছিল, তার মধ্যে পদ্মা সেতু (সড়ক) আসছে জুনে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর অক্টোবরে উদ্বোধন করা হবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল। ডিসেম্বরে রাজধানীবাসীর জন্য চালু হবে প্রথম মেট্রোরেলের আংশিক সেবা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেক ষড়যন্ত্রের জাল আর প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে যাচ্ছি। এই সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে সরাসরি রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে।”

বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে বাংলাদেশ।

এরপর ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর তিনি সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় পূর্ণ আকৃতি পায় স্বপ্নের সেতু, যুক্ত হয় পদ্মার দুই পাড়। ইতোমধ্যে সেতুর ৯৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে প্রকল্পের কর্মকর্তাদের ভাষ্য।  

পদ্মা নদীর ওপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু দেশের জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ হারে অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “এ বছরের শেষ নাগাদ নাগাদ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ অংশে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটারের এমআরটি-৬ লাইনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ প্রকল্পের সমন্বিত অগ্রগতি হয়েছে ৭২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ বছর ডিসেম্বরে ওই অংশে যাত্রী পরিবহন শুরু করা যাবে বলে আশা করছে সরকার। আর মতিঝিল পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আশা করা যায়, মেট্রোরেল রাজধানী ঢাকার পরিবহন খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।”

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ কাজের তিন চতুর্থাংশ শেষ হয়ে গেছে। আগামী অক্টোবরেই দেশের প্রথম এই টানেল চালু করা যাবে বলে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে আশা প্রকাশ করেন।

কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে 'ওয়ান সিটি টু টাউন' গড়ে তুলতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকার। ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেল হলে চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যের আর প্রসার ঘটবে, জীবনমানেও পরিবর্তন আসবে বলে সরকার আশা করছে।   

দেশের অন্য বড় প্রকল্পগুলোর কাজও এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাষণে বলেন, “দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট আগামী বছরের এপ্রিল নাগাদ চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “জনগণের সরকার হিসেবে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। গত ১৩ বছরে আমরা আপনাদের জন্য কী কী করেছি, তা আপনারাই মূল্যায়ন করবেন। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমরা যেসব ওয়াদা দিয়েছিলাম, আমরা তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।”

 
SCROLL FOR NEXT