বাংলাদেশ

কুলখানিতে ফজলে হাসান আবেদের আত্মার শান্তি কামনা

Byজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

শুক্রবার বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার জন্য মিলাদ ও দোয়া করা হয়।

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, ব্যারিস্টার কামাল হোসেন, সাবেকমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য রহমতউল্লাহ ও বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ আরও অনেকে কুলখানিতে অংশ নেন। এছাড়া ফজলে হাসান আবেদের আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা কুলখানিতে উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত সুধীজনের পক্ষে স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

তিনি বলেন, “স্যার ফজলে হাসান আবেদ দেশে-বিদেশে এত যশ, সম্মান, স্বীকৃতি-পুরস্কার পেয়েও অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন। তার বড় অবদান হচ্ছে, একটি জনহিতকর প্রতিষ্ঠান চালু করার পর সেটাকে এগিয়ে নিতে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। তার গড়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই জনকল্যাণে নিবেদিত।”

ফজলে হাসান আবেদের মৃত্যু বাংলাদেশের জন্য ‘এক অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

তিনি বলেন, “অবহেলিত মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ও স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী তার যে অবদান তা-ই তাকে চির স্মরণীয় করে রাখবে।”

ফজলে হাসান আবেদের জামাতা ও ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ পরিবারের পক্ষে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, “স্যার ফজলে সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। পরিবারের সদস্য বা সহকর্মী সকলের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, ব্যক্তি সমস্যাকেও তিনি গুরুত্ব দিতেন, সমাধানের চেষ্টা করতেন।

“দেশের বাইরে গেলে অনেক ব্যস্ততার মাঝেও পরিচিতজনদের সাক্ষাতের জন্য সময় বের করে নিতেন। বক্তৃতা বা নীতিবাক্য দিয়ে নয়, কাজের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি সবাইকে সঠিক পথটি দেখাতেন। আজীবন তিনি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের কথা চিন্তা করেছেন।”

গত ২০ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

গত ২২ ডিসেম্বর আর্মি স্টেডিয়ামে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও জানাজার পর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা ব্র্যাক এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও। এশিয়া, আফ্রিকা অঞ্চলের ডজনখানেক দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল।

দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের নাইট উপাধিতে ভূষিত হন ফজলে হাসান আবেদ। ওই বছরই স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত জাতিসংঘ মহাসচিবের পরামর্শদাতা দলের সদস্য করা হয় তাকে। এ বছর নেদারল্যান্ডসের নাইটহুড ‘অফিসার ইন দ্য অর্ডার অব অরেঞ্জ-নাসাউ’ খেতাবে ভূষিত হন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম, মেলিন্ডা গেটস এবং অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী অভিজিৎ ব্যানার্জি ও এস্তার দুফলো শ্রদ্ধার সঙ্গে এই বাংলাদেশির অবদান স্মরণ করেছেন।

SCROLL FOR NEXT