সোমবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হবে। পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানাবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে নিয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা সাজিয়েছেন তিনি।
সাধারণত প্রতি সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী চাইলে যে কোনো দিন মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকতে পারেন।
নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর গত ১৪ জানুয়ারি সোমবার প্রথম বৈঠক করার সুযোগ থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততার কারণে ওইদিন বৈঠক ডাকা হয়নি বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
রোববার কয়েকজন মন্ত্রীর দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকের ফোল্ডার তারা গত ১৭ জানুয়ারি পেয়েছেন, তাতে আলোচনার জন্য ছয়টি ‘এজেন্ডা’ রাখা হয়েছে।
প্রথম বৈঠকের এজেন্ডা
# আগামী ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি যে ভাষণ দেবেন, তার খসড়া অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের এক নম্বর এজেন্ডা হিসেবে রাখা হয়েছে।
# গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) আইন ২০১৯’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে তোলা হবে। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পথ তৈরি করতে গত ৩১ অক্টোবর যে অধ্যাদেশ জারি হয়েছিল, সেটি এবার সংসদে তুলে আইনে পরিণত করা হচ্ছে।
# ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য; ‘জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ আইন, ২০১৯’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এবং ‘বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র আইন, ২০১৯’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উঠবে।
# ২০১৩ সালের ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন’ এবং ২০১৫ সালের ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালার’ আলোকে ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মপরিকল্পনার খসড়া’ অনুমোদনের জন্য সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকের এজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে।
# এছাড়া ৭ নম্বর ‘বিবিধ’ এজেন্ডায় যে কোনো বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সাধারণত সব মন্ত্রী মন্ত্রিসভা বৈঠকে অংশ নেন। যেসব মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন, তার সাধারণত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডাক পান না।
তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার জন্য এজেন্ডাভুক্ত মন্ত্রণালয়ে যদি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকেন তখন তিনজনই বৈঠকে ডাক পান।
এর বাইরে প্রধানমন্ত্রী চাইলে যে কোনো প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রীকে বৈঠকে ডাকা হয়। যারা বৈঠকে থাকবেন, তাদের কয়েক দিন আগেই ফোল্ডার দেওয়া হয়।
যেসব মন্ত্রণালয়ের এজেন্ডা থাকে সেসব মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও ওই দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ উপস্থিত থাকার ডাক পান।
বৈঠকের পর সেই ফোল্ডার বৈঠক কক্ষেই রেখে যেতে হয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের। এজেন্ডাভুক্ত কোনো বিষয়ে মন্ত্রিসভার আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ‘কেবিনেট’ ফোল্ডারসহ সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত গোপন রাখা হয়।
সাধারণত মন্ত্রিসভার এজেন্ডাভুক্ত বিষয়ে আলোচনার পর সরকারি কর্মকর্তারা বের হয়ে গেলে অনির্ধারিত আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন সময়ে অনির্ধারিত এসব আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বলেও খবর পাওয়া যায়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ফোন করবেন তা ২০১৩ সালের শেষ দিকের একটি মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় সহকর্মীদের জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
রেকর্ড চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়ে শেখ হাসিনা এবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা; বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি জনপ্রশাসন এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নিজের হাতে রেখেছেন।