বাংলাদেশ

প্রশিক্ষণকাজে মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী

Byনিজস্ব প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিসিএস প্রশাসন একাডেমির ১০৭, ১০৮ ও ১০৯তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রচলিত একটি ধারণা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, আমি দেখেছি একটা ধারণা আমাদের, এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠানে কাউকে পদায়ন করলে মনে করা হয় তাকে ডাম্পিং প্লেসে ফেলা হল। ঠিক আমি জানি না এই মানসিকতা কেন। যে কারণে আমি যতদূর পারি যখনই যে প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে আমাকে দাওয়াত দেওয়া হয় আমি সাথে সাথে উপস্থিত হই, আমি যাই। কেন যাই? কারণ তার গুরুত্বটা যে বেশি।

“কারণ আমি মনে করি রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা দায়িত্ব নিতে যাবে তাদের প্রশিক্ষণটা হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ । এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটায় কাউকে পদায়ন করলে সে মনে করবে তাকে ডাম্পিং প্লেসে ফেলা হল, এটা যেন কোনো মতে না ঘটে বরং সব থেকে যে মেধাবী থাকবে, যার মাঝে উদ্ভাবনী শক্তি আছে, যে নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা জাগ্রত করতে পারবে এবং প্রশিক্ষণ দিতে পারবে তাকেই এই পদে নিয়োগ দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। যাতে আমার আগামীদিনের কারিগররা উপযুক্ত হয়ে উঠে।”

জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক থেকে দেশকে রক্ষায় কাজ করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

“সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। যে যেখানেই দায়িত্ব পালন করবেন এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন। যা একটা সমাজকে ধ্বংস করে দেয়, একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়, সেটা যেন কোনোমতে না হয়। আমরা এতটুকু বলতে পারি আমরা দক্ষতার সাথে এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। দেশ সন্ত্রাস মুক্ত, মাদক মুক্ত হবে পাশাপাশি দুর্নীতিমুক্ত হবে।”

কর্মকর্তাদের জন্য নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রমোশনের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা ছিল। জটিলতার পাশাপাশি ছিল মামলা। তারপরও আমরা ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সচিব পদে ১৮০ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ১১৫০ জন, যুগ্ম সচিব পদে ২০২৫ জন এবং উপ-সচিব পদে ২৬৮৬ জনকে পদোন্নতি দিতে সক্ষম হয়েছি। এত পদোন্নতি বোধহয় কোনো দিন কোনো সরকার এক সাথে দিতে পারেনি। আমরা সেটা দিয়েছি।”

“২০০৯ থেকে ২০১৮ সময়কালে যে পরিমাণ বেতনভাতা বাড়িয়েছি পৃথিবীর কোনো দেশ একসাথে এত বেতনভাতা বাড়াতে পারে না। আমরা আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়েও যেভাবে বেতনভাতা বৃদ্ধি করেছি, ফ্ল্যাট ক্রয় করার ঋণ, গাড়ি ক্রয়ের ঋণ থেকে শুরু করে নানাভাবে আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। যেন সুন্দর একটা মন মানসিকতা নিয়ে দেশের সেবাটা আপনারা করতে পারেন।”

গণমাধ্যম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেক সময় অনেক পত্রিকা এটা-ওটা লেখে আর আমাদের অনেকে সেটা নিয়ে ঘাবড়ে যায়। আমি অন্তত এইটুকু বলতে পারি রাষ্ট্র পরিচালনায় আমি পত্রিকার লেখা পড়ে গাইডলাইন গ্রহণ করি না। আমি গ্রহণ করি আমাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা, পরিকল্পনা এবং জ্ঞান।

“তার কারণ দেশটা আমার। আমি জানি দেশটার জন্য কোনটা মঙ্গল। যেহেতু দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছি অবশ্যই জানব কোথায় কি সমস্যা আছে, কোথায় নাই। সেটা বুঝেই কাজ করি। তাহলেই দেশটাকে এগিয়ে নেয়া যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “কে কি বলল সেটা শুনে অমনি রিক্র্যাক্ট করা এই চিন্তায় আমি বিশ্বাস করি না। হ্যাঁ, ওখান থেকে তথ্য নিতে পারি, খবর নিতে পারি ওইটুকুই। কিন্তু ওটা দেখেই সঙ্গে সঙ্গে কিছু করতে হবে আমি সেটা বিশ্বাস করি না। কোনো পদক্ষেপ নিতে গেলে নিজস্ব বিবেচনায় নিতে হবে, নিজের চিন্তায় নিতে হবে, নিজের দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ থেকে নিতে হবে। সেভাবে নেওয়া গেলে সেভাবে সফলতা অর্জন করা যাবে।”

অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, বিসিএস প্রশাসন একাডেমির মহাপরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

SCROLL FOR NEXT