বাংলাদেশ

এক তরফা ওয়েজ বোর্ডে কাজ হবে কি, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

Byজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ওয়েজ বোর্ডে সরকার মধ্যস্ততার ভূমিকা পালন করে জানিয়ে তিনি বলেছেন, মালিক প্রতিনিধি ছাড়া এক তরফা ওয়েজ বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত কঠিন হবে।

বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার তথ্য অধিদপ্তরের সামনে ডিজিটাল আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

“মজুরি বোর্ড গঠনের কাজ ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেছি। মালিকদের প্রতিনিধি আমরা পাইনি, আমরা মালিকদের তাগাদা দিচ্ছি প্রতিনিধি দেওয়ার জন্য। এ ব্যাপারে দেন-দরবার চলছে এবং অনুরাধ করছি আপনারা অবিলম্বে প্রতিনিধি দেবেন, আমরা ওয়েজ বোর্ড গঠন করব।”

‘মালিকরা প্রতিনিধি না দিলে এক তরফা ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করব কি- না এটা একটা কঠিন সিদ্ধান্ত’ মন্তব্য করে ইনু বলেন, “আমি সংবাদিক ভাই-বোনদের মঙ্গল চাই।

“আমরা মনে করি বিএফইউজে, ডিইউজে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এবং সরকারের সঙ্গে, সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে যে এই রকম এক তরফা ওয়েজবোর্ড গঠনের মধ্য দিয়ে আমার সাংবাদিক বন্ধুরা উপকার পাবেন কি পাবেন না।”

সাংবাদিকদের সর্বশেষ বেতন কাঠামো হয়েছিল ২০১২ সালে; এরপর সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ার পর সংবাদকর্মীদের দাবির মুখে নবম ওয়েজ বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেয় তথ্য মন্ত্রণালয়।

কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন না হওয়ায় আন্দোলনে রয়েছেন সংবাদকর্মীরা। সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াব প্রতিনিধির নাম না দেওয়ায় বোর্ড গঠন করা যাচ্ছে না বলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

মালিক পক্ষ প্রতিনিধি দিতে সম্মত হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “কিন্তু এখনও তারা প্রতিনিধি দেননি, আমরা একটা ধৈর্য্য ধরে তাগাদা দিচ্ছি। আশা করছি মালিকরা প্রতিনিধি দেবেন। মালিকদের প্রতিনিধি পেলেই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করে দেব।

“ওয়েজ বোর্ডে সরকার কেবল মধ্যস্ততার ভূমিকা পালন করে। এখানে সাংবাদিক পক্ষ ও মালিক পক্ষ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, তৃপক্ষীয় আলোচনার মধ্য দিয়ে ওয়েজ বোর্ডের বিষয়টি চূড়ান্ত করে।”

পাঁচ বছর পর পর ওয়েজ বোর্ড দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক উত্থান-পতনের কারণে পাঁচ বছর অন্তর ওয়েজ বোর্ড দেওয়া অতীতে সম্ভব হয়নি। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার ২০১৩ সালের সেপ্টম্বর মাসে বহু খাটাখাটনি করে ওয়েজ বোর্ড দিতে সক্ষম হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৫ বছর পূর্তি হবে। ৫ বছর পর যাতে গণমাধ্যমের কর্মীরা নবম ওয়েজ বোর্ডর সুযোগ পায় এর সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।

তবে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের আগেই নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন ইনু।

তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের মধ্য থেকে দাবি উঠার সঙ্গে সঙ্গেই সরকার ওয়েজ বোর্ড গঠনের কাজ শুরু করেছে। সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে, কর্মচারী বন্ধুদের সঙ্গে আমরা একাধিকবার বসেছি। ওয়েজবোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে কোনো লুকোছাপার অবস্থান নেই। সাংবাদিক ও কর্মচারীদের দাবির সঙ্গে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মত এক, আমরা একে অপরের প্রতিপক্ষ নই, শত্রুও নই।

“তথ্য মন্ত্রণালয় যেখানে ওয়েজ বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে, ৮০ ভাগ কাজ শেষ করেছে, সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় ওয়েজ বোর্ডের বিরুদ্ধে এ কথাটা সঠিক নয়, আমরা পক্ষেই আছি।”

ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ওয়েজ বোর্ডের অধীনে নন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আমরা এ ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছি, কীভাবে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বন্ধুদের আওতায় আনা যায় সে ব্যাপারে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে।”

ইনু বলেন, “যেখানে আমরা সবাই একই জায়গায় আছি সেখানে সাংবাদিকদের বন্ধুদের, নেতৃবৃন্দের রাস্তায় মিছিল করার দরকার নেই। আপনারা শান্ত হোন, ধৈর্য্য ধরুন, আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুন, ইনশাআল্লাহ ওয়েজ বোর্ড বাংলাদেশে হবে।”

আলোকচিত্র প্রদর্শনীর বিষয়ে ইনু বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মকাণ্ডের কিছু অংশ তুলে ধরছি, দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হচ্ছে।

“বাংলাদেশের অভ্যূদয়, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের কথা আস্তে আস্তে মানুষের কাছে প্রকাশ পাচ্ছে, মানুষ বুঝতে পারছে। ইতিহাস যতই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হোক ইতিহাস কখনও ধামাচাপা থাকে না। বঙ্গবন্ধু স্ব-মহিমায় বাংলাদেশে আবার উদ্ভাসিত,” বলেন জাসদ সভাপতি ইনু।

প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বেতারের মহাপরিচালকের মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

SCROLL FOR NEXT