বাংলাদেশ

এখন তো ভগ্নিপতির মতো কথা বলা যাবে না: আবদুল হামিদ

Byনিজস্ব প্রতিবেদক

“আমার এখন আবার সমস্যা। আমি তো এখন রাষ্ট্রপতি। সুতরাং ভগ্নিপতির মতো এখন বলা যাবে না।”

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলীর জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির জন্য লিখিত বক্তব্য প্রস্তুত করা হয়। আবদুল হামিদ বেশিরভাগ সময় সেটাই পড়েন। তবে মাঝে মাঝে এর বাইরে গিয়েও নিজের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক টানে কথা বলেন তিনি।

স্পিকারের দায়িত্ব পালনের সময় থেকে জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে জনপ্রিয় আবদুল হামিদ বলেন, “কোন কথার কোন অর্থ কে যে কীভাবে করে... আমি লেখার (লিখিত বক্তব্য) মধ্যে থাকতে নিরাপদ বোধ করি। লেখার ভেতর থাকা সত্ত্বেও আমার কথা কতভাবে যে টুইস্ট হয়, নিউজ হয়!”

হাস্যোজ্জ্বল মুখে আবদুল হামিদ বলেন, “এমন একটা ব্যাপার যাই করুক না কেন আমার কোনো সুযোগ নাই প্রতিবাদ করার। বেকায়দা একটা পজিশনে আছি। আমি এটা বলতে পারি না, আপনি যেভাবে বলছেন, আমি সেইভাবে বলি নাই। এটারও সুযোগ নেই।”

“আমি আবার লেখায় ফিরে যাই,” বলে আবার নিজের লিখিত বক্তব্যের ফিরে যান আবদুল হামিদ।

বক্তব‌্যে জেল হত‌্যাকাণ্ডের শিকার এম মনসুর আলীর সঙ্গে নিজের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হামিদ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সরকারে মনসুর আলী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময়কার কথাও আসে আবদুল হামিদের কথায়।

“আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় যেতাম। উনার (মনসুর আলী) সিগার খাওয়ার অভ্যাস ছিলো। সিগার খাইতেন। আমারও তখন অভ্যাস ছিল, সিগারেট খাইতাম। উনি যখন সিগারের প্যাকেটটা রাইখা অন্য কোথাও গ্যাছে আমি চার-পাঁচটা সরায়া ফেলতাম।”

রাষ্ট্রপতির একথায় পুরো মিলনায়তনে হাসির রোল পড়ে।

রাষ্ট্রপতি বলতে থাকেন, “উনি ট্যার পাইতেন না। গুনে রাখতেন না। সিগার বাংলাদেশে পাওয়া যাইতো না, বিদেশ থেকে আসতো। এটা খাইতে একটু টেস্ট... অনেক ইতিহাস...।”

আবদুল হামিদ বলেন, “আমার একটা সুবিধা ছিল, শুধু এমএনএ না, এমপিদের মধ্যেও আমি সবার ছোট ছিলাম। এজন্য সবাই, জাতীয় নেতা যারা আছে, সবাই স্নেহ করতেন এবং এই স্নেহের পুরোটাই আমি ব্যবহার করেছি।”

এসময় আবারও হাসির রোল পড়ে পুরো মিলনায়তন জুড়ে।

মঞ্চে উপস্থিত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে জেল জীবনের স্মৃতিও তুলে ধরেন আবদুল হামিদ।

“মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী, আমরা একসঙ্গে জেলে ছিলাম। সে ইতিহাস। ময়মনসিংহ জেল থেকে আমারে ট্রান্সফার করে দিল কুষ্টিয়া জেলে। হঠাৎ শুনলাম তোফায়েল সাহেব কুষ্টিয়া জেলে আসবেন। ভাবলাম দেখাটা হবে। কিন্তু উনাকে আনবার আগেই আমাকে ট্রান্সফার করে দিল রাজশাহী জেলে। দেখাটা হল না। আবার রাজশাহী থেকে তদবির করে ঢাকায় আসলাম। জেল থেকে ট্রান্সফার হওয়া, সেখানেও তদবির লাগে। তখন লাগত, এখন লাগে কি না, জানি না।”

SCROLL FOR NEXT