বাংলাদেশ

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে ভোগান্তি নেই, দাবি মন্ত্রীর

Byসংসদ প্রতিবেদক

“পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের প্রচণ্ড ভোগান্তি হচ্ছে, এ অভিযোগ সত্য নয়,” মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন সংসদ কাজে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই মন্ত্রী।

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন করতে গিয়ে জনগণের দুর্ভোগের কথা গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল আইনমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, “কার্ড সংশোধনে সাধারণ মানুষের বছরও পার হয়ে যায়।”

জবাবে আনিসুল হক বলেন, “আবেদনকারীদের মধ্যে যাদের কাগজপত্র ঠিক থাকে, তারা এক দিনেই কাজ শেষ করতে পারেন।

“অন্যদিকে যে সকল জনগণ চাহিত সংশোধনের সপক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য দলিলাদি দাখিল করতে পারেন না, তাদের ক্ষেত্রে সময় লাগে বা সংশোধন করা সম্ভব হয় না। আর এসব নাগরিকগণই এ ধরনের অভিযোগ করেন।”

পরিচয়পত্র সংশোধনে আগারগাঁওয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন দপ্তরে ভিড় (ফাইল ছবি)

পরিচয়পত্র সংশোধনে আগারগাঁওয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন দপ্তরে ভিড় (ফাইল ছবি)

পরিচয়পত্র সংশোধনীতে দেরির কারণ ব্যাখ্যা করে আইনমন্ত্রী বলেন, “সংশোধনীর আবেদনের মধ্যে বেশির ভাগেরই জন্ম তারিখ, নিজের নাম, পিতা-মাতার নামের আমূল পরিবর্তনজনিত বিধায় সংশ্লিষ্ট প্রামাণিক দলিলাদি প্রয়োজন হয়, যারা দিতে পারেন না, তাদের সিদ্ধান্ত পেতে সময় লাগে।।”

“কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সও কম-বেশি করার দাবি আসে,” বলেন তিনি।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এ টি এম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিরও উদ্যোগ নেয়।

এখন এই পরিচয়পত্র নাগরিকদের প্রায় সবক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হচ্ছে। আগের পরিচয়পত্র বদলে নাগরিকদের চিপ সম্বলিত স্মার্ট কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬ লাখ ১৩ হাজার ২৮৯ জন ব্যক্তি আবেদন করেছেন বলে মন্ত্রী জানান, যা নিবন্ধিত ভোটারের শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ।

ভুল সংশোধনের জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে ২৪ হাজার ৫৩২ জন করণিক ভুল এবং পাঁচ লাখ ৮৮ হাজার ৭৫৭ জন তথ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছেন বলে সংসদে জানানো হয়।

মন্ত্রী বলেন, ভুল সংশোধন করে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৪১ হাজার ৩৫৯টি আবেদনপত্র সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে।

পরিচয়পত্রে ভুল থাকার জন্য ভুক্তভোগীরা এর ‘সম্পূর্ণ দায়’ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের উপর দিয়ে বলছেন, তথ্য লিপিবদ্ধ করার সময় তাদের অসচেতনতাই সমস্যা বাড়িয়েছে।

তবে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পাল্টা অভিযোগ চাকুরেদের প্রতি। তাদের দাবি, অনেক চাকুরে বয়স কমিয়ে চাকরিতে থাকার চেষ্টা চালানোয় তথ্যবিভ্রাটের এই ঝঞ্ঝাট।

মন্ত্রী জানান,  অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেটের পর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার ১৪৮ জন আবেদন করেছেন।

“এদের মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৩২টি আবেদনের তথ্যাদি সংশোধন করে ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। অবশিষ্ট আবেদনগুলো স্বল্প সময়ের মধ্যে সংশোধন করে প্রদান করা হচ্ছে।”

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের সেবা দ্রুত দিতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু, উপজেলা পর্যন্ত এ সেবা বিকেন্দ্রীকরণ ও অনলাইনে আবেদন নেওয়া চালু করার কথাও জানান আনিসুল হক।

জাতীয় পরিচয়পত্রের গুণগত মান উন্নয়নের জন্য স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রে ৩ স্তরে ২৫টির মত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সন্নিবেশিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

SCROLL FOR NEXT