সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।
ঢাকায় মিরপুর কেন্দ্রিক ৩০ কোম্পানির বাসে রোববার থেকে ই-টিকেট চালুর কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।
শনিবার ইস্কাটনে সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এরপর আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ঢাকা শহরে সকল কোম্পানি অর্থাৎ ৬০টি কোম্পানির ৩ হাজার ৩১৪টি বাস ই-টিকেটের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এতে অতিরিক্ত ভাড়া, গণপরিবহনে নৈরাজ্য আর দুর্ঘটনা কমে আসবে।
এছাড়া পাশ্বর্বতী শহর থেকে ঢাকায় প্রবেশ করা ৩৭টি কোম্পানির বাসসহ মোট ৯৭ কোম্পানির ৫ হাজার ৬৫০ বাস আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ই-টিকেটের আওতার আনার কথা জানান এই পরিবহন নেতা।
তার ভাষ্য, “এখন থেকে আর বাস মালিকরা কন্ট্রাক্ট ভিত্তিতে বাস চালাবেন না। এর ফলে যাত্রী নেওয়ার জন্য দুই বা ততোধিক বাসের দৌরাত্মও কমে যাবে। গণপরিবহনে নৈরাজ্য ও দুর্ঘটনাও কমে আসবে।”
এনায়েত বলেন, “ঢাকা শহরের সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা পরীক্ষামুলকভাবে ই-টিকেটিং শুরু করেছিলাম। কিন্তু প্রথম দিকে মালিক পক্ষ আয়ের পুরো টাকা না পাওয়ায় পিছিয়ে যায়। এরপর আমরা মাঠ পরিদর্শন শুরু করে গাড়িতে মেশিন দিয়ে টিকেটিং সিস্টেম শুরু করি। এ পর্যন্ত আটটি কোম্পানির বাস ই-টিকেটিংয়ে চলছে।
“গাড়িতে ই-টিকেট মেশিন দিয়ে টিকেট কাটার পর থেকে মালিকরা আয় দেখতে শুরু করে। এরপর থেকে মালিকরাও ই-টিকেটেকের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে। গত এক মাসে আমরা ঢাকার সকল বাস পরিবহন মালিকদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছি। প্রায় ২১ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
বাসে ই-টিকেটিংয়ের ইতিবাচক বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রথমে ই-টিকেটে আয় আসছিল না, পরে বাসে টিকেটের মেশিন দিয়ে টিকেট কাটা শুরু করার পর আয় বেড়েছে। এই হিসাব স্বচ্ছভাবে মালিক দেখতেও পারে। তবে প্রতি বাসে একজন কর্মচারী বাড়াতে হয়েছে।
“যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করাও সম্ভব হচ্ছে। যাত্রী নির্ধারিত স্টেশন থেকে নির্ধারিত টিকেট কিনে বাসে উঠছেন। আবারও কেউ স্টেশন ছাড়া উঠে পড়লে তাকে বাসে থাকা মেশিন দিয়ে চার্ট অনুযায়ী টিকেট দেওয়া হচ্ছে। এতে কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় সম্ভব হচ্ছে না।”
চুক্তিতে কাউকে বাস চালাতে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এজন্য ড্রাইভারের ব্তেন অনেক বাড়ানো হয়েছে। গাড়ি চালাতে মালিককে দেওয়া বাধ্যতামুলক জমার টাকা তুলতে বাসগুলোর মধ্যে যে অসম প্রতিযোগিতা আছে, তাও দূর হবে।”
যাত্রীদের অভিযোগের জন্য তিনটি হটলাইন নম্বর- ০১৬১৮৯৩৩৫৩১, ০১৬১৮৯৩৬১৮৫ এবং ০১৮৭০১৪৬৪২২ নম্বর দেওয়া হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদ (সবুর) এবং বিভিন্ন বাস কোম্পানির প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।