কেরানীগঞ্জে ঘরে ঘরে আলো

ঢাকার কেরানীগঞ্জকে এক সময় ‘বাতির নিচে অন্ধকার’ বলা হলেও দিন বদলের ধাক্কায় চিত্রপট আমূল বদলে গেছে; এখন কেরানীগঞ্জের ঘরে ঘরে পৌঁছেছে বিজলির আলো।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2018, 10:21 AM
Updated : 28 Dec 2018, 10:21 AM

দশ বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার সময় কেরানীগঞ্জের মাত্র ৩৬ শতাংশ মানুষের ঘরে পৌঁছেছিল বিদ্যুৎ। কিন্তু গত এক দশকের উন্নয়নে দেশের প্রায় আড়াইশ উপজেলা যেমন শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এসেছে, তেমনি কেরানীগঞ্জেরও শতভাগ মানুষের ঘরে পৌঁছেছে বিদ্যুৎ।

২০০৮ সালে দিন বদলের সনদ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কেরানীগঞ্জের (ঢাকা-৩) মাটি ও মানুষের নেতা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর নেতৃত্বে ঢাকার এই জনপদ উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাংলাদেশের মধ্যে একটি রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দায়িত্বে থাকতে সারাদেশে বিদ্যুতায়নের কাজ যেমন করেছেন তেমনি নিজের সংসদীয় আসন এলাকাতেও রেখেছেন বিশাল ভূমিকা। কেরানীগঞ্জে লোড শেডিংয়ের দুঃসহ যন্ত্রণার যেমন অবসান করা হয়েছে তেমনি দেড় লাখ গ্রাহককে নতুন সংযোগ দিয়ে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, স্থাপন করা হয়েছে সোলার চার্জিং স্টেশন।

সারাদেশেই বিদ্যুতের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে নসরুল হামিদ বিপু বলেন, “কিছুদিন আগেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ থাকতো না ১৬ থেকে ১৭ ঘন্টা। আমরা কিন্তু ভুলতে বসেছি সেই গল্পগুলো। আজকে সারা বাংলাদেশ আলোয় আলোকিত। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চল আমরা বিদ্যুতের আলোয় ভরে দিয়েছি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এখন সবখানে।”

কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাকুর হোসেন বলেন, ১০ বছর আগে বেশিরভাগ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। অধিকাংশ সময় লোডশেডিং লেগেই থাকত। নসরুল হামিদ বিপুর উদ্যোগে এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। লোডশেডিংও নেই। মাটির নিচ দিয়ে সঞ্চালন লাইনও করা হয়েছে।

ভবিষ্যতের জন্য করা হচ্ছে নানা পরিকল্পনা। ব্যবসায়ী কেন্দ্র কেরানীগঞ্জে বিসিক শিল্প নগরীতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া, গ্রাহকের চাহিদার ভিত্তিতে চাওয়া মাত্রই এক দিনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া এবং প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ বিলের স্বচ্ছতা আনতে প্রি-পেইড মিটার চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এক দশকে বিদ্যুৎ খাতে কেরানীগঞ্জের অর্জন

# কেরানীগঞ্জ উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে।

# কেরানীগঞ্জ উপজেলাকে নিয়ে নতুন করে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ গঠন করা হয়েছে।

# কেরানীগঞ্জে লোড শেডিংয়ের দুঃসহ যন্ত্রণার অবসান করা হয়েছে।

# এই উপজেলায় নতুন সংযোগ দেওয়া হয়েছে এক লাখ ৪৬ হাজার 

   ৩৭৯টি। মোট গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৩৯ লাখ।

# নতুন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বা সাব স্টশন নির্মাণ করা হয়েছে এবং সাব 

   স্টেশনগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।

# রুহিতপুরে সোলার চার্জিং স্টেশন স্থাপান করা হয়েছে; যার সক্ষমতা

  ২১ কিলোওয়াট।

# দুর্ঘটনা প্রতিরোধ এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে

  রাস্তার ওপর থেকে বৈদ্যুতিক লাইন সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে স্থাপনের  

  কাজ শুরু হয়েছে।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা

# বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা

  গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হবে।

# নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হবে।

# কেরানীগঞ্জ একটি ব্যবসায়ী কেন্দ্র হওয়ায় এখানকার বিসিক শিল্প

  নগরী এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া

  হবে।

# গ্রাহকের চাহিদা মোতাবেক চাওয়া মাত্রই এক দিনে বিদ্যুৎ সংযোগ 

  দেওয়া হবে।

# প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ বিলের স্বচ্ছতা আনতে প্রি-পেইড মিটার চালু

  করা হবে।

# গ্রাহকের সুবিধার্থে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হবে।