ভ্যাট দুই স্তরে হচ্ছে: মুহিত

নতুন ভ্যাট আইনে একই হার থেকে পিছিয়ে আসছে সরকার। ১৫ শতাংশ নয়, ভ্যাটের হার হবে দুই স্তরে। একটা স্তর হবে ৭ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে। আর আরেকটা হবে ১৫ শতাংশ।

আবদুর রহিম হারমাছি ওয়াশিংটন ডিসি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2017, 06:03 PM
Updated : 12 Oct 2017, 06:03 PM

নতুন সরকার আসার পর ২০২০ সালে দুই স্তরের এই ভ্যাট হার কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম দিনে আইএমএফের ডিএমডি মিতসুহিরো ফুরুসাওয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান তিনি।

আইএমএফের পরামর্শেই ২০১২ সালে নতুন ভ্যাট আইন করে সরকার। তাতে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের বিধান রাখা হয়।

২০১৬ সালের জুলাই থেকে তা কার্যরকর করার কথা ছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের বিরোধিতার কারণে তা এক বছর পিছিয়ে দেয় সরকার।

তাতেও বিরোধিতা করে ব্যবসায়ীরা। শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নতুন ভ্যাট হার বাস্তবায়নের সময় আরও দুই বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়।

মুহিত বলেন, “আমরা চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট হার বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন, নতুন ভ্যাট হার এখন কার্যকর হবে না। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশ ভ্যাট হার বাস্তবায়নের জন্য এখন ভালো সময় নয়।

“সামনে নির্বাচন… সে কারণেই আমরা সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দুই বছর পিছিয়ে দিই। এখন নির্বাচনের পর নতুন যে সরকার আসবে তারাই নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করবে। আর সেটা হবে ২০২০ সালে।”

তখনও আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় থাকবে বলে দৃঢ় আশাবাদী মুহিত।

নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না করায় আইএমএফ ডিএমডি কিছু বলেছেন কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “হাঁ, তিনি জানতে চেয়েছেন কেন আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি…। আমি আমাদের বাস্তব অবস্থা তাকে অবহিত করেছি।

“আমি তাকে বলেছি, নতুন ভ্যাট হার হবে দুইটা স্ল্যাবে (স্তরে)। একটি স্ল্যাব হবে সাড়ে ৭ থেকে  ৮ অথবা ১০ শতাংশ-এর মধ্যে; যেটা বর্তমানে ৩/৪ শতাংশ আছে। আর অন্য স্ল্যাবটি হবে ১৫ শতাংশই।”

বিশ্ব ব্যাংক সদর দপ্তরে এই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।

বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের ছয় দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন শেষ হবে ১৬ অক্টোবর।

সম্মেলনে ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আযম রয়েছেন।

ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন ভূঁইঞাও প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

সম্মেলনের প্রথম দিন বেশ ব্যস্ত সময় কাটান অর্থমন্ত্রী।

প্রতি বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পর পর দুই বছর ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফ সদর দপ্তরে এই সম্মেলন হয়। তৃতীয় সম্মেলনটি হয় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া এই দুই সংস্থার সদস্যভুক্ত অন্য কোনো দেশে। ২০১৫ সালে পেরুর লিমায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।