একটু বেশি সুদে হলেও বড় ঋণ চাই: মুহিত

বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে সহজ শর্তে কম সুদে ঋণ নেওয়ার সুযোগ থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে চায় বাংলাদেশ।

আবদুর রহিম হারমাছি ওয়াশিংটন ডিসি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2016, 03:45 AM
Updated : 8 Oct 2016, 03:45 AM

বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি এবং অর্থনীতির পরিসর বেড়ে যাওয়ায় বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে এখন বড় আকারের ঋণ প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

“এখন আমাদের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। সে কারণে সহজ শর্তে ঋণের পাশাপাশি একটু বেশি সুদের (আইবিআরডি-বিশ্ব ব্যাংকের আরেকটি ঋণ) ঋণ দরকার। আমাদের প্রধানমন্ত্রীরও এতে সায় আছে।”

বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল দুই সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে ওয়াশিংটনে অবস্থানরত মুহিত শুক্রবার সাংবাদিকদের একথা বলেন।

স্বল্পোন্নতের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ‌্যে মধ‌্যম আয়ের দেশে উঠেছে। ফলে বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তা আগের মতো পাওয়ার সুযোগ কমে যাবে।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারার সক্ষমতা অর্জন করায় এখন বেশি সুদের বড় ঋণেও সমস‌্যা দেখছেন না মুহিত।

“আমাদের এখন স্বল্প সুদের পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার। জিডিপির সাইজ ২০০ বিলিয়ন ডলার। ইটস নাথিং...। এখন আমরা একটু বেশি সুদে, তবে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে কম হারে ঋণ নিতে পারি।”

এর ব্যাখ‌্যায় তিনি বলেন, “আমরা এতদিন কনসেশনাল (আইডিএ) ঋণ নিতাম। এখন তার চেয়ে একটু বেশি সুদে অর্থাৎ আইবিআরডি ঋণ নিতে পারি।

“আমরা একটু বেটার হয়েছি...। আমাদের অর্থনীতি বড় হয়েছে। এখন আমরা বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের আইডিএ ঋণের পাশাপাশি আইবিআরডি ঋণও নিতে পারি। সে সামর্থ‌্য আমাদের হয়েছে।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বেসরকারি খাতের উন্নয়ন হয়েছে। আরও হবে...। সে কারণেই আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন।”

অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা, অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ বিশ্ব ব‌্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। প্রতিনিধি দলে চারজন সাংবাদিকও রয়েছেন।

ওয়াশিংটন ডিসিতে কনস্টিটিউশন হলে ৩ দিনের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় অতিথিদের স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সংস্থা দুটির শীর্ষ নির্বাহীরা সারা বিশ্বের রাজনীতিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

সম্মেলনে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্ড দুজনই আরও ৫ বছর পদে থাকছেন বলে জানানো হয়।

১৮৮টি সদস্য রাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের সহযোগিতা ছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের কোনো পদক্ষেপই সফল হবে না বলে নীতি-নির্ধারকদের রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর জোর দেন জিম।

তিনি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি সমবণ্টনের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে দরিদ্রতা দূর করার আহ্বান জানান।

উদ্বোধনী পর্বের পর বিশ্ব ব্যাংক সদর দপ্তরে সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এনেট ডিক্সনের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করতে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ‘মাল্টিল্যাটেরাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সির (মিগা) শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ভারতের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে মধ্যাহ্ণভোজ সভায় যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে মুহিতের।