পাশাপাশি আদালতের প্রার্থিতা আটকে ধানের শীষের প্রার্থী শূন্য হওয়া অপর ১৫টি আসনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সরকারবিরোধীদের সমর্থন দিয়েছে দলটি।
ভোটের একদিন আগে বৃহস্পতিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান এ তথ্য জানান।
ঢাকা-১ ছাড়াও ঢাকা-২০, নরসিংদী-৩, মানিকগঞ্জ-৩, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-৪, জামালপুর-১, জামালপুর-৪, গাইবান্ধা-৪, নীলফামারী-৪, জয়পুরহাট-১, বগুড়া-৭, রাজশাহী-৬, নাটোর-৪, ঝিনাইদহ-২, সিলেট-২ ও দিনাজপুর-৩ আসনেও বিএনপির প্রার্থী নেই।
নজরুল বলেন, “যেখানে যেখানে প্রার্থী শূন্য আছে সেখানে সমর্থন স্থানীয়ভাবে দেওয়া হচ্ছে, কেন্দ্রীয়ভাবে নয়। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্য কোনো সরকারবিরোধী প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। একেক জায়গায় একজনকে কিংবা একেক দলকে সমর্থন দিচ্ছেন তারা।
“কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে অমুক দলকে দিচ্ছি, সেটা আমরা দিচ্ছি না।”
ঢাকা-১ আসনে সালমা ইসলামকে সমর্থনের খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “হ্যাঁ, ওখানে তো আমাদের আর কোনো প্রার্থী নাই এখন। অতএব তাকেই।”
এই আসনে দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আশফাক খন্দকারকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি। পরে উচ্চ আদালতের রায়ে তার মনোনয়ন অবৈধ হলে সেখানে ধানের শীষের প্রার্থী শূন্য হয়।
এই আসনের বর্তমান সাংসদ সালমা ইসলাম যমুনা গ্রুপের মালিক নুরুল ইসলাম বাবুলের স্ত্রী; যুগান্তর, যমুনা টিভির মালিকানা তাদেরই।
বিএনপিবিহীন ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নৌকার আবদুল মান্নান খানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সালমা।
অপরদিকে নৌকার প্রার্থী সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার; তার মালিকানায় রয়েছে ইংরেজি দৈনিক দ্য ইনডিপেনডেন্ট ও ইনডিপেনডেন্ট টিভি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এর আগে ২০০১ সালে নৌকা প্রতীকে ঢাকা-২ (দোহার) আসন থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। এই আসনে এবারই প্রথম প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
এখানে সালমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা-নির্যাতনের খবর পাচ্ছেন জানিয়ে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, “আজকেও টিভিতে স্ক্রল দেখলাম প্রতিদিনই সালমা ইসলামের গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, তার কর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হচ্ছে।”
নজরুল ইসলাম খান বলেন, “এই সরকার বলে যে, তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। বীরোত্তম শাহজাহান ওমর তার এলাকায় ভোট চাইতে যেতে পারেন না। বীরবিক্রম অলি আহমেদ তার বাড়ির সামনে গিয়ে সেখান থেকে তার কম্পিউটার নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তার ড্রাইভারকে ধরে নেওয়া হয়েছে, তার কর্মচারীদের ধরে নেওয়া হয়েছে। তিনি নির্বাচনে প্রচার করতে পারেন না।
“বীর বিক্রম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এলাকায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। বীরপ্রতীক সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে এলাকায় আক্রান্ত হতে হয়েছে। কাজেই খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা যাদের হাতে নিরাপদ না, তারা কতখানি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সেটা জনগণ বিবেচনা করে দেখবে।”
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল আউয়াল খান, হায়দার আলী লেলিন, আমিরুজ্জামান শিমুল, কাজী আজিজুল হাকিম আরজু, ওমর ফারুক শাফিন, নাহিদুর রহমান জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।