মাহবুব তালুকদারের একক নির্দেশনা বিভ্রান্তিমূলক: ইমাম

মাহবুব তালুকদারকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, কোনো নির্বাচন কমিশনারের একক নির্দেশনা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2018, 04:21 PM
Updated : 26 Dec 2018, 06:21 PM

“কোনো কমিশনার একক নির্দেশনা দিতে পারেন না, উচিত নয়।  তাহলে জনমনে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। কারণ এতে চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়।”

বুধবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের নেতা ইমাম।

বৈঠকে সিইসি কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

মাহবুব তালুকদার এই বৈঠকে ছিলেন না। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে মতভিন্নতার কারণে আলোচিত এই নির্বাচন কমিশনার এদিন সকালে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “জাতীয় নির্বাচনে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও সন্ত্রাসের ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না।”

এইচ টি ইমাম বলেন, “নির্বাচন কমিশন মানে সিইসি ও চার কমিশনার যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো কমিশনারের বা যে কারও একার কিছু বলা সমীচীন হবে না। 

“সকালে গণমাধ্যমে একজন কমিশনারের বক্তব্য শুনেছি। আমরা নিজেরাই হতচকিত হয়ে গেছি। কারণ একজন কমিশনার এককভাবে কোনো নির্দেশনা দিতে পারেন না, যা সিদ্ধান্ত হবে সে বিষয়ে নির্দেশ দেবেন পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সে সিদ্ধান্ত জানাবেন। কমিশন থেকে বের হয়ে আরেকজন ব্যক্তিগত মত দেবে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।” 

কমিশন বৈঠকে ভিন্নমত প্রকাশের পর তা বাইরে প্রকাশ নিয়েও আপত্তি তোলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ইমাম।

তিনি বলেন, “এতে করে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। কারণ কমিশনের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।”

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, “সরকারি দল হিসেবে আমরা অনেক কিছুই বলতে পারি। অনেকের কাছে আমরা নির্দেশও দিতে পারি কিন্তু তা না করে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে বারবার আসি এজন্য যে অন্যরাও এটা করে। কারণ সকলে মনে করে কমিশনের কাছে বিচার পাব। আমাদের কাছে কমিশন হচ্ছে ভরসাস্থল। এ বিষয়টি অন্যান্যরা পালন করেন না।”

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কামাল হোসেনদের মঙ্গলবারের আচরণের প্রসঙ্গ তুলে ইমাম বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে শুধু হেয় নয়, কমিশনের সামনে এমনভাবে কথা বলেন, যেগুলো আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। নির্বাচন কমিশনকে কেউ কেউ টেবিল চাপড়ে কথা বলেন বা কেউ অশোভন উক্তি করেন, এতে আমরাও ছোট হয়ে যাই।

“আমরা কমিশনকে বলেছি, আপনারা সবচেয়ে উঁচু প্রতিষ্ঠান। আমরা টেবিলও চাপড়াবো না, আমরা ধমকও দেব না।”  

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে ভোটের সময় যান চলাচলে বিধিনিষেধ শিথিল, সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি, প্রার্থী ও দলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জন্য যান চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

ইমাম বলেন, “অর্থের অনেক চালানের মধ্যে একটি ধরা পড়েছে। কালো টাকার প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।”

নির্বাচনের দিন অনলাইন মানি ট্রান্সফার ও মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ রাখতে কমিশনের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কয়েকটি এনজিওর ভোট পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আপত্তিও কমিশনে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

ইমাম বলেন, “এনজিও ব্যুরো থেকে দেখলাম, ১১৯টির মধ্যে ৭৫টির নিবন্ধন নেই। অধিকারের বিষয়ে মামলা আছে, এনজিও ব্যুরো বলছে, তাদের নিবন্ধন নেই।”