‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’র দাবি নিয়ে ইসিতে আওয়ামী লীগ

এত দিন বিএনপি যে দাবি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ দিয়ে এসেছিল নির্বাচন কমিশনে, এবার সেই দাবি নিয়ে গেল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Dec 2018, 04:11 PM
Updated : 23 Dec 2018, 04:18 PM

ভোটের এক সপ্তাহ আগে বিএনপির বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে ইসিতে গিয়ে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে এল আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল।

রোববার রাতে এই চিঠি জমা দিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর আক্রমণ ও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ২০১৩ সালের মতো সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চলেছে। যা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত বাধাগ্রস্ত করছে। 

“এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের জন্য নির্বাচন করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতের সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অভিযোগ করে আসছিল, আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা মন্ত্রী-সংসদ সদস্য পদে থেকে ভোট করায় নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং  ফিল্ড’ নেই।

তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি একের পর এক নালিশ জানিয়ে গেছে ইসিতে। তাদের বক্তব্য হল, প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ করায় নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত হচ্ছে না।

তবে তফসিল ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সংঘাতে আওয়ামী লীগের দুই নেতা নিহত হওয়ার দিকটি তুলে ধরে ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা বলছেন, তারাই আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।

আখতারুজ্জামান বলেন, সারাদেশে ২৪ জায়গায় বোমা হামলা-অগ্নিসংযোগ, গুলিবর্ষণ করা হয়েছে।

“ভোটের প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে বিএনপি, জামায়াত ও ঐক্যফন্টের নেতাকর্মীদের হাতে দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের উপর নির্যাতন চলছে।

“এসব নির্যাতনে তাদের হাতে এ পর্যন্ত পাঁচজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নিহত ও ২৫০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া বসতবাড়ি দোকানপাটসহ ১১টি গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।”

পাবনা, রংপুর, মাগুরা, টাঙ্গাইল, শেরপুর, হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, পটুয়াখালী জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা, কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইসিতে দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির ভিন্ন নালিশ

২৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনে নালিশ দিয়েছে বিএনপি।

রোববার সন্ধ্যায় দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান সিইসির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসেন। সেই সঙ্গে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার নির্দেশনা চান তিনি।

সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে নজরুল সাংবাদিকদের বলেন, প্রচারণার শেষ পর্যায়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ২৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল।

“কিন্তু গতরাতে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২৪ ডিসেম্বরের পর কোনো জনসভার অনুমতি দেওয়া হবে না। পুলিশের এ সিদ্ধান্ত আরপিও পরিপন্থি। আমরা ২৭ ডিসেম্বর সভা করার অধিকার রাখি। ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশ কমিশনারকে অবগত করলেই হয়।”

ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার চালানোর আইনি সুযোগ থাকার কথা জানান বিএনপি নেতারা।

নজরুল বলেন, “আগামীকাল (সোমবার) প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় সভা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের পর ঢাকায় সমাবেশ করা যাবে না, পুলিশের এ সিদ্ধান্ত বিমাতাসুলভ আচরণ, উদ্দেশ্যমূলক।

“সিইসি আমাদের বলেছেন, নিয়ম অনুযায়ী আমরা জনসভা করতেই পারি। এ বিষয়ে সিইসি পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।”