এ ব্যাপারে শনিবার পৃথক সংবাদ সন্মেলন করেন সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী এম এ মুহিত এবং সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনে নৌকার প্রার্থী হাবিবে মিল্লাত মুন্না।
সকাল ১১টার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান টুকুর সিরাজগঞ্জ শহরের হোসেনপুরস্থ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে বক্তব্য দেন শীষের প্রার্থী এম এ মুহিত।
মুহিতের অভিযোগ, শাহজাদপুরে নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা প্রতীক বরাদ্দের পরের দিন থেকেই ধানের শীষের প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা করছে, নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে, গায়েবী মামলায় পুলিশ দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় প্রশাসন একজোট হয়ে নির্বাচনকে ‘তামাশা ও প্রহসনে’ পরিণত করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত ও মৌখিকভাবে অন্তত ৮/১০টি অভিযোগ করা হলেও তার কোনো প্রতিকার বা আশ্বাস পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, শাহজাদপুর থানার পুলিশ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করে গায়েবী মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন ধানের শীষের এই প্রার্থী।
এজন্য তিনি উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, শাহজাদপুর থানার ওসি খাজা মো. গোলাম কিবরিয়া ও পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, দলের নেতা মজিবর রহমান লেবু, আজিজুর রহমান দুলাল, নাজমুল ইসলাম তালুকদার রানা, নূর কায়েম সবুজ, হারুন-অর-রশিদ খান হাসান, আবু সাইদ সুইট, মির্জা মোস্তফা জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, দুপুর ১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সিরাজগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী দলের জেলা ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবে মিল্লাত মুন্না।
তিনি বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসীরা খন্তা, শাবল, ছুরিসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্রের সঙ্গে ধানের শীষ লাগিয়ে প্রচার মিছিল করছে। তারা নিশ্চিত পরাজয় জেনে নৌকার প্রচারে বাধা, মিছিলে ও বাড়িতে হামলা এবং কর্মীদের মারপিট করছে।
“গত কয়েকদিনে আমাদের ১০/১২ জন কর্মীকে মারপিট করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচার মিছিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। জনগণের কাছে সাড়া না পেয়ে নির্বাচনে জয়ের জন্য নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি।”
এসব বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অন্তত ১০/১২টি লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মামলা করা হলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নৌকার প্রার্থী মুন্না’র পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়া হারুন-অর-রশিদ, টিভি ও চলচ্চিত্র অভিনেতা জাহিদ হাসান, নৌকার প্রার্থীর সহধর্মিনী এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক শারিতা মিল্লাত, দলের জেলা সহ-সভাপতি বিমল কুমার দাস, মোস্তফা কামাল খান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি খাজা গোলাম কিবরিয়া বলেন, “গায়েবী মামলায় আমরা কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানী করিনি। ধানের শীষের প্রার্থীর অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুন নাহার সিদ্দিকা বলেন, উভয় প্রার্থীর অভিযোগগুলোর বিষয়ে পৃথক কমিটি করে বিচার বিভাগীয়, জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। কেউই এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।