বগুড়ায় সিপিবি ও জাপার নির্বাচনী সভায় হামলা

বগুড়ায় কমিউস্টি পার্টি ও জাতীয় পার্টির দুটি নির্বাচনী পথসভায় হামলা, ভাংচুর ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2018, 04:22 PM
Updated : 19 Dec 2018, 05:12 PM

বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় কমিউনিস্ট পার্টির পথসভায় এবং এর এক ঘণ্টা পর শহরতলীর কৈগাড়ি এলাকায় জাতীয় পার্টির পথসভায় হাতবোমা হামলা হয়।

কমিউনিস্ট পার্টির পথসভায় হামলাকারীরা পরে জেলা ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

কমিউনিস্ট পার্টি হামলার জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা-কর্মীদের এবং জাতীয় পার্টি হামলার জন্য বিএনপি সমর্থকদের দায়ী করেছে।

বগুড়া-৬ (সদর) আসনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী কমিউনিস্ট পার্টি নেতা আমিনুল ফরিদ, ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, লাঙলের প্রার্থী মহাজোট মনোনীত জাতীয় পার্টি নেতা বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলাম।

এখানে নৌকা প্রতীক কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নেই।

কমিউনিস্ট পার্টি বগুড়া জেলা সম্পাদক আমিনুল ফরিদ বলেন, তার নির্বাচনী প্রতীক কাস্তে মার্কার সমর্থনে বুধবার বিকালে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা চত্বরে পথসভার আয়োজন করা হয়।

“সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য আসলাম খান বক্তব্য রাখছিলেন; তখন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাসিমের নেতৃত্বে ১৫/১৬ জন সমাবেশস্থলে ঢুকে পড়ে।

“তারা বক্তৃতারত আসলাম খানকে লাথি মেরে সরিয়ে দেয়। পরে তারা মাইক এবং অ্যাম্প্লিফায়ার ভাংচুর করে।”

আমিনুল ফরিদ

আমিনুল ফরিদ আরও অভিযোগ করেন, এরপর হামলাকারীরা পথসভার পাশেই টেম্পল রোডে ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

“ঘটনাস্থলের কাছেই পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা কেউ আমাদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি।”

বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মহাজোট মনোনীত লাঙলের প্রার্থী জাতীয় পার্টি নেতা বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যার পর তিনি সদরের কৈগাড়ি বাজার এলাকায় নির্বাচনী পথসভা শুরু করেন। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে ওইদিক দিয়ে চলে যায়।

“প্রায় এক ঘণ্টা পর রাত পৌনে ৮টার দিকে তারা ফেরার সময় আমি যখন বক্তৃতা শেষ করব তখন আমার পথসভাকে লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনানো হয়।”

তবে ওই হামলায় কেউ আহত হয়নি বলে তিনি জানান।

কমিউনিস্ট পার্টির পথসভায় হামলার বিষয়ে বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান বলেন, “সেখানে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। সমাবেশ চলার সময় একদল যুবক তাদের মাইক বন্ধ রাখার কথা বলে।”

ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে তালা লাগানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “তালা তারা নিজেরা লাগিয়েছে।”

জাতীয় পার্টির পথসভায় হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বদিউজ্জামান বলেন, “হামলার খবর পেয়েছি। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। তার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।”

কমিউনিস্ট পার্টির সভায় হামলার ব্যাপারে জানতে বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সাজেদুর রহমান শাহীনকে ফোন করে পাওয়া যায়নি।

জাতীয় পার্টির সভায় হামলার ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চান বলেন, “আমরা নিজেরাই সব সময় হামলার আতঙ্কে আছি। তাদের সভায় হামলা করার প্রশ্নই ওঠে না। 

সিপিবির নিন্দা

কমিউনিস্ট পার্টির সভায় হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি নিন্দা প্রকাশ, দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করেছে।

বুধবার রাতে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম তাদের বিবৃতিতে এ ঘটনার জন্য দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

ধুনটে বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাংচুর

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিএনপির একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোসাইবাড়ী ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।

বিএনপির ধুনট উপজেলা সভাপতি ফজলুর রহমান মানিক বলেন, হামলার ভয়ে তাদের কার্যালয় ওই সময় বন্ধ ছিল। একদল যুবক তাদের কার্যালয়ের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল, টেলিভিশনসহ অন্যান্য জিনিস ভাংচুর করেছে।

তিনি এ হামলার জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দায়ী করেছেন।

এ ব্যাপারে গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, তারা এ হামলা করেননি। নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ হামলা হয়েছে।

বগুড়া-২ (ধুনট-শেরপুর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী নাগরিক ঐক্য নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না এবং লাঙলের প্রার্থী মহোজোট মনোনীত জাতীয় পার্টি নেতা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। এখানে নৌকা মার্কা কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নেই।