প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা মঙ্গলবার রাঙামাটিতে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে একজন নির্বাচন কমিশনারের অস্তিত্বে আঘাত হেনেছেন বলে বুধবার এক লিখিত প্রতিবাদলিপিতে বলেন এই নিরবাচন কমিশনার।
দুপুরে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত প্রতিবাদলিপি পাঠ করেন মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ১৮ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে বলেছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লিয়িং ফিল্ড নেই বলে আমি মিথ্যা কথা বলেছি। আমি তার বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারণ এ কথা বলে তিনি একজন নির্বাচন কমিশনারের অস্তিত্বে আঘাত করেছেন। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, সিইসিসহ সব নির্বাচন কমিশনার সমান।”
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকে বিএনপি অভিযোগ করে আসছিল, ভোটের সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত হচ্ছে না। তফসিল ঘোষণা শেষে প্রচার শুরুর পরও বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ইসিতে দফায় দফায় অভিযোগ দিয়ে একই কথা বলে আসছে।
এর মধ্যেই শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়েছে।
এরপর সোমবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে বৈঠক করে পুনরায় একই অভিযোগ জানানোর পর মাহবুব তালুকদার একটি লিখিত বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি বলেন, নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ হয়েছে বলে মনে করেন না তিনি।
কয়েকজন সাংবাদিকের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি ওই লিখিত জবাব দেন।
সহকর্মীর ওই বক্তব্য ‘ব্যক্তিগত ও অসত্য’ বলে মঙ্গলবার রাঙামাটিতে এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন সিইসি নূরুল হুদা।
ওইদিন বিকালে চট্টগ্রামে আরেক অনুষ্ঠানেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে আলোচনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন সিইসি।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে গত সোমবার তার বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে মাহবুব তালুকদার বিষয়টি বিবেচনার ভার আবারও সংবাদকর্মীদের ওপর ছেড়ে দেন।
“সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমি গত ১৭ ডিসেম্বর বলেছিলাম, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কী নেই তা সাংবাদিকরা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করলেই উত্তর পেয়ে যাবেন। এখনও সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলছি, আপনার নিজেরা বিচার বিবেচনা করে দেখুন, নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কী নেই?”
ইভিএম নিয়ে বিরোধিতা করে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে এবং সভা বর্জন করে আলোচিত মাহবুব মাহবুব তালুকদারকে ‘বিএনপির মনোনীত’ হিসেবে দেখেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।
নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে তাদের প্রস্তাবিত নাম নেওয়া হয়েছিল। তখন বিএনপির তালিকায় মাহবুব তালুকদারের নাম ছিল বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন।