‘ভীতি’ ছড়ানো নিয়ে আ.লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি দোষারোপ

নির্বাচন ঘিরে চট্টগ্রামের ভোটারদের মধ্যে ‘ভীতি সৃষ্টি’ করা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2018, 10:40 AM
Updated : 17 Dec 2018, 02:01 PM

সোমবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে নগরীর ছয়টি আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ভোটারদের মধ্যে ‘ভীতি সৃষ্টির’ জন্য সরকারি দল ও পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করেন।

বিপরীতে ভোটারদের মনে ‘ভয়ের আবহ’ থাকার নেপথ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দিন চলা বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডব ও ‘আগুন সন্ত্রাসকে’ দায়ী করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিনপুত্র নওফেল একাদশ জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ আসনে নৌকার কাণ্ডারী। অন্যদিকে আমীর খসরু চট্টগ্রাম-১১ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন।    

সোমবারের সভায় বিভাগীয় কমিশনারের উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, “ভোটারদের মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় শঙ্কা- ভোট দিতে যেতে পারব তো? একথা আসলো কেন? এই ‘ফিয়ার সাইকোসিস’ সৃষ্টি কারা করল? এই যে গায়েবি মামলা- এটা কার চিন্তা? এর উদ্দেশ্য কী?

“এমন কী বাধ্যবাধকতা যে বাড়ি থেকে আমাদের দলের নেতাকর্মী, সমর্থক এমনকি এজেন্টদেরও গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রার্থীদের প্রচারণার আগে-পরে ওই এলাকায় তাণ্ডব। পুলিশ ভিডিও করছে প্রচারণা। এসব কী দেশের মানুষ দেখছে না?”

পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সব থেকে বড় প্রশ্ন আজ কেন একটি দলের জন্য প্রশাসন এ ভূমিকায়? একটা উদাহরণ দেন যে ঘটনার তদন্ত বা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

“সব মন্ত্রী পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ঘুরছে। আওয়ামী লীগের একটা লোক গ্রেপ্তার হয়েছে? সব বিরোধীদলের লোক কেন গ্রেপ্তার হবে? কাল থেকে এসব এবং গ্রেপ্তার অভিযান বন্ধ করুন। সব থেকে বড় কথা জনগণ এসব আর বিশ্বাস করছে না।”

আমীর খসরুর বক্তব্যের জবাবে নওফেল বলেন, “ভোটারদের মধ্যে কোনো ভয়-ভীতি দেখছি না। অথচ বারবার এটা যখন বলা হচ্ছে তখন প্রেক্ষাপট দেখা দরকার। ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিরোধের নামে যে তাণ্ডব, আগুন সন্ত্রাস ও হত্যাকাণ্ড চালানো হয় একটি দলের নেতৃত্বের নির্দেশে- তখনই ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

“কেউ ভয়ের কাজ করলে, কোনো তাণ্ডব-হত্যায় সম্পৃক্ত থাকলে তাদের মধ্যেই ভয় আসে। প্রার্থী হিসেবে আমিও শঙ্কিত তারা যদি আবার কিছু ঘটায়। ভোটাররা ভোট দিতে পারবে কিনা? এর কারণ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে শত শত ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।”

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া হয়রানি ও গ্রেপ্তার নিন্দনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভোটারদের শঙ্কার আরেকটি কারণ যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত নিবন্ধনহীন এক দলের লোকজন একটি জোটের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে।”

এসময় আমীর খসরু বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “উনি রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা রাজনৈতিক মঞ্চ নয়।”

তখন বিভাগীয় কমিশনার নওফেলের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনি বলেছেন, আমরা শুনেছি। আপনার নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে কিছু বলার থাকলে বলুন। ইভিএম নিয়ে যদি কিছু বলতে চান।”

তখন নওফেল জানান, তার চট্টগ্রাম-৯ আসনে ইভিএম নিয়ে নারী ভোটারদের মধ্যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

সভায় চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “রোববার নয়াবাজারে বিজয় শোভাযাত্রার উদ্বোধনী বক্তব্য দেওয়ার সময় লাঠি ও অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। তারা আমাকে গুলি করতে উদ্যত হয়।

“আমার এ অবস্থা হলে নেতাকর্মীদের কী অবস্থা? নির্বাচনের পরিবেশ তো নেইই, পরিবেশের আরো অবনতি হচ্ছে। এভাবে চললে দেশে গণতান্ত্রিক ধারার অবনতি হবে। এর দায় আপনাদের নিতে হবে।”

পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা, নেতাকর্মী-এজেন্টদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার, এলাকা ছাড়তে হুমকি এবং নির্বাচনী কাজে জড়িতদের গায়েবি মামলা দেওয়ার অভিযোগ করে নগরীর বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের অদল-বদল করার প্রস্তাব দেন নোমান।

সভায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বাংলাদেশ জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, “দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা নিয়ে যেহেতু নির্বাচনে এসেছে পার্থক্য তো আমাদের আছেই। নির্বাচনে জড়িতদের দোষারোপ করে তাদের কাছ থেকে আবার সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে সেটা সম্ভব না।”

আইন অনুসারে কাজ করতে বিভাগীয় কমিশনারসহ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান বাদল।

সভায় বিএনপির প্রার্থী ইসহাক কাদের চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৪) ও আবু সুফিয়ান (চট্টগ্রাম-৮) এবং চট্টগ্রাম-৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম নির্বাচনী প্রচারে বাধা, নেতাকর্মীদের নির্বাচারে গ্রেপ্তার, পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন।

সভায় বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে পারিবারিক ও আত্মীয়তার বন্ধন আছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এটা সহায়ক। চট্টগ্রামের অবস্থা তুলনামূলক ভালো।

“আশাকরি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকবে। প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে গণসংযোগ করতে পারেন সেটা আমরা দেখব। মানুষ অবশ্যই ভোট দিতে যেতে পারবে। এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করবেন না। দেখুন, অপেক্ষা করুন।”

বিরোধী দলের কোনো নেতাকর্মী-সমর্থক যাদের বিরুদ্ধে মামলা বা পরোয়ানা নেই তাদের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

সভায় অতিরিক্তি বিভাগীয় কমিশনার শঙ্কর রঞ্জন সাহা, চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক দীপক চক্রবর্তী, উপ-পরিচালক ইয়াছমিন পারভিন তিবরিজী, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, অতিরিক্ত ডিআইজি আবুল ফয়েজ এবং নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

জেলার আসনগুলোর প্রার্থীদের  নানা অভিযোগ

চট্টগ্রাম নগরীর বাইরের সংসদীয় আসনগুলোর প্রার্থীদের নানা অভিযোগ শুনলেন ওই ১০টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন।

সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রার্থীরা তাদের দলীয় প্রচার চালাতে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন। মহানগরের বাকি ছয়টি আসনের দায়িত্বে থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রাম-১৩ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বিএনপি নেতা সরোয়ার জামাল নিজাম অভিযোগ জানান, তার এলাকায় কর্ণফুলী থানায় তার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৫০টির বেশি মামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “মোহছেন আউলিয়া মাজার জেয়ারত ও আমার বাড়িতে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারদলীয় কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আগে থেকে অবস্থান করায় আমি যেতে পারিনি। গত ১৩ ডিসেম্বর মইজ্জ্যার টেক এলাকায় নির্বাচনী সভা করার জন্য আমি পুলিশ থেকে অনুমতি নিয়েছি।

“তার আগেই সরকার দলীয় লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে অবস্থান শুরু করে। বিষয়টি আমি কর্ণফুলী থানার ওসিকে জানালে তিনি আমাকে অন্য জায়গায় সভা করার পরামর্শ দেন।”

চট্টগ্রাম- ১২ আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী এনামুল হক এনাম তার নির্বাচনী এলাকায় প্রচারে বাধা পাওয়ার কোনো অভিযোগ না করলেও তার দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন।

গ্রেপ্তারের অভিযোগ নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ইলিয়াছ বলেন, “বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে শুধু তাদের ধরা হচ্ছে।”

মামলা ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে বিষয়টি তাকে জানানোর অনুরোধ জানান ডিসি।

চট্টগ্রাম-২ আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আজিম উল্লাহ বাহার ও চট্টগ্রাম-৩ আসনের প্রার্থী মোস্তফা কামাল পাশা তাদের এলাকায় প্রচার করতে না দেয়া এবং দলীয় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ আনেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ইলিয়াছ বলেন, “এ ধরনের পোস্টার ছেঁড়ার ঘটনা ঘটলে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আমি প্রার্থীদের বলব, আপনারা আপনাদের কর্মীদের এ ধরনের কাজ করতে নিষেধ করুন।”

এদিকে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের বিএনপি প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী আওয়ামী লীগ কর্মীরা নিজেরা ‘ঝামেলা’ তৈরি করে পুলিশকে মামলা নিতে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, “আমরা জানি আপনাদের সীমাবদ্ধতা আছে। সরকারদলীয় কর্মীরা নিজেরা ঝামেলা তৈরি করে পুলিশকে মামলা নিতে বাধ্য করছে। আর ওইসব মামলা দিয়ে দলীয় কর্মীদের গ্রেপ্তার করাচ্ছে।”

সভায় বাঁশখালী উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন বিএনপি প্রার্থী জাফরুল।

তিনি বলেন, “বাঁশাখালীর সরল উপজেলার চেয়ারম্যান রশিদ আহমেদ আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের প্রচারণা না করতে ‍হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো করে উনি বাঁশখালীতে উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন।”

বৈঠকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রার্থী উপস্থিত থাকলেও চটগ্রাম-১ আসনের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম-২ আসনের মাহফুজুর রহমান মিতা, চট্টগ্রাম-৪ আসনের দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ উপস্থিত ছিলেন না।

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, তার এলাকায় বিএনপি প্রার্থী এনামুল হকের প্রচারে ‘কোনো ধরনের সমস্যা’ সৃষ্টি করা হচ্ছে না।

তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি কোলাগাঁও ইউনিয়নের তার নির্বাচনী প্রচারণার কাজে থাকা এক যুবলীগকর্মীর মোটর সাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী জামায়াত নেতা আ ন ম শামসুল ইসলামের পক্ষে তার প্রধান নির্বাচনী সম্বন্বয়ক ও দক্ষিণ জেলা জামায়াতর সেক্রেটারি জাফর সাদেক অভিযোগ করেন, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়ার পরও শামসুল ইসলামকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, “সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের কারণে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছি না আমরা। বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাককর্মীদের মারধর করে পুলিশে দেওয়া হচ্ছে। পরে তাদের অস্ত্র আইনে চালান দেওয়া হচ্ছে।”

এছাড়া কয়েকদিন আগে তাদের কর্মীদের নির্বাচনী বৈঠকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ করেন।

প্রার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগ শুনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা বলেন, “আপনারা ঢালাওভাবে অভিযোগ করবেন না। অনেক সময় ছোট্ট একটি ঘটনাকে আপনারা বড় করে ফেলেন।

“কয়েকদিন আগে এক প্রার্থীর নির্বাচনী সভায় কিছুটা সমস্যা হয়। ওই সময় তার ছেলে পড়ে গিয়ে হাতে হাল্কা আঘাত পায়। কিন্তু ওই প্রার্থী আমাকে ফোন করে বলছে, তার ছেলে গুরুতর আহত হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে গেছে। তার অস্ত্রোপাচার করা হচ্ছে। কিন্তু আমি জানলাম, তার ছেলের তেমন কিছু হয়নি।”

রাখাল বালকের বাঘ আসার প্রবাদ উল্লেখ করে এসপি মিনা বলেন, “আপনারা এভাবে অভিযোগ করলে বড় কোন ঘটনা ঘটে গেলে কেউ যাবে না। তখন ছোট কিছু মনে করে আমরা না গেলে বড় কিছু হয়ে যাবে।”

নির্বাচনে পুলিশ-বিজিবি-সেনা সদস্যদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

এসপি মিনা বলেন, “পত্রিকায় দেখেছি, কোনো কোনো দল বলছে, সরকারি বাহিনীর প্রতি তাদের আস্থা নেই। তারা ভোট কেন্দ্র পাহারা দেওয়ার কথা বলছে। এভাবে করে একটি পক্ষকে ক্ষেপিয়ে তোলা হচ্ছে।”

২০১৪ সালের নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামে জামায়াতি তাণ্ডবের বিষয়টিতে ইঙ্গিত করে এসপি বলেন, “যতই কিছু হোক, সব দোষ পড়ে পুলিশের। আগের নিবাচনে আমাদের দুই পুলিশ সদস্যকে খুন করা হয়েছে। বাঁশখালীতে আদালত ভবন ও উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

“আগের মতো কেউ কিছু করার চেষ্টা করলে আমরা সমুচিত জবাব দিব। সে ধরনের প্রস্তুতি আমাদের এখন আছে।”

নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের মোবাইল ফোন সঙ্গে না রাখার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার কিংবা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রধান ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও কাছে মোবাইল ফোন থাকবে না।

“বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখেছি পোলিং এজেন্টরা কেন্দ্র থেকে গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা কিংবা মারামারির সৃষ্টি করে।”

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ইলিয়াছ হোসেন প্রার্থীদের প্রতিদিনের খরচ লিখে রাখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, “আমি যে কোনো সময় তা দেখতে পারি। আপনারা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক খরচের বাইরে নির্বাচনে নির্ধারিত খরচের বেশি করবেন না।”

বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মুনির হোসাইন খান উপস্থিত ছিলেন।