বিজয়ের মাসে এসেছি নৌকায় ভোট চাইতে: শেখ হাসিনা

মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের মাসে নৌকাকে আবারও বিজয়ী করতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রিয়াজুল বাশার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2018, 07:10 AM
Updated : 13 Dec 2018, 07:32 AM

গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় নিজের নির্বাচনী আসন থেকে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ভোটের প্রচার শুরুর পর বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড়ে এক পথসভায় তার এ আহ্বান আসে।

ছোট বোন শেখ রেহানাকে পাশে নিয়ে পথসভার মঞ্চে শেখ হাসিনা বলেন, “৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচন। নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। যে নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা এদেশের  স্বাধীনতা পেয়েছেন, যে নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছেন, যে নৌকায় ভোট দিয়ে দারিদ্র্যমুক্ত ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলছি।… বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে কেউ অবহেলা করতে পারে না।”

ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ পক্ষে ভোট চেয়ে দলের সভাপতি বলেন, “এই মাস আমাদের বিজয়ের মাস। নৌকার বিজয়ের মাস। এই নির্বাচনে আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, এখানে আমরা প্রার্থী দিয়েছি কাজী জাফরউল্লাহ সাহেবকে। তিনি নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তিনি প্রতিনিধি। আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী। সেই মনোনিত প্রার্থীকে আপনারা জয়যুক্ত করবেন।”

উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চাইলে আবারও নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “দেশে পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে। আজকে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে না পারে, পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। ২০০১ সালে সেতু নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। বিএনপি ক্ষমতায় আসল, তা বন্ধ করে দিল।

“আগামীতে কেউ এসে যেন আমাদের কাজ বন্ধ করতে না পারে সেজন্য আপনাদের ভোট মূল্যবান। মাদক সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ করে কেউ যেন আপনাদের ভোট ছিনিয়ে নিতে না পারে সেজন্য অবশ্যই আপনারা জনমত সৃষ্টি করে ভোট কেন্দ্র পাহারা দিয়ে আপনার ভোট আপনি দেবেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। যেন উন্নয়নের জোয়ারটা অব্যাহত রাখতে পারি।”

শেখ হাসিনা বলেন, তার নিজের জীবনে কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। তার একটাই লক্ষ্য, জাতির জনকের স্বপ্ন পূরণ করা। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও তিনি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান।

বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে নিজের নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় পৌঁছে প্রথমেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত করেন শেখ হাসিনা।

বিকালে কোটালীপাড়া উপজেলা সদরে শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজমাঠে নিজের প্রথম নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি।

সেখানে তিনি স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, অগ্নিসংযোগকারী ও তাদের দোসরদের ভোটের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান ভোটারদের কাছে।

বৃহস্পতির সকালে টুঙ্গীপাড়া থেকে রওনা হয়ে বিভিন্ন স্থানে পথসভা করে করে সড়কপথে ঢাকার দিকে এগোচ্ছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারাও তার সঙ্গে রয়েছেন।

যাত্রাপথে বাজার ও সড়কে অসংখ্য মানুষ নৌকা মার্কার ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, পোস্টার হাতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তারা নৌকা মার্কা ও আওয়ামী লীগের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। জনসমাগমস্থলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাড়ির গতি কমিয়ে নেতা কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কোথাও কোথাও হাতে মাইক নিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, বাহাউদ্দিন নাছিম ও নৌকার প্রার্থী কাজী জাফরউল্লাহ ভাঙ্গা মোড়ের পথসভায় উপস্থিত ছিলেন।

ভাঙ্গা মোড়ের পর ফরিদপুরের মোড়, রাজবাড়ী মোড়, আরোয়া ইউনিয়ন, পাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ পৌরসভা, রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ (ধামরাই) ও সাভারের জালেশ্বর মৌজার ৫ নম্বর ওয়ার্ডেও নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।