হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ সাবেক এ দুই প্রতিমন্ত্রীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার আদালত তা স্থগিত করে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বুধবার সেই স্থগিতাদেশ চলমান রেখেছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চে এই আদেশ দেয়।
এর ফলে টুকু ও দুলু আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে টুকু সিরাজগঞ্জ-২ আসনে এবং দুলু নাটোর-২ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। নির্বাচন কমিশনে আপিলেও সেই সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
নির্বাচন কমিশনে আপিল খারিজ হয়ে যাওয়ার পর টুকুর আসনে তার স্ত্রী রুমানা মাহমুদ এবং দুলুর আসনে তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচন কমিশনে তালিকা পাঠায় বিএনপি।
এই অবস্থায় হাই কোর্টে গিয়ে নিজেদের পক্ষে আদেশ পান সাবেক বিএনপি সরকারের এই দুই প্রতিমন্ত্রী।
তাদের রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে।
পাশাপাশি দুলু ও টুকুর মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ওই দুই আসনে দলের কোনো বিকল্প প্রার্থী থাকলে এবং তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে চাইলে সেই সুযোগও দিতে বলা হয়।
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের আবেদনে চেম্বার আদালত মঙ্গলবার হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত করে শুনানির জন্য বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়। বুধবার শুনানি শেষে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ চলমান রাখে।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর পক্ষে আপিল বিভাগে শুনানি করেন আজমালুল হোসেন কিউসি, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর পক্ষে ছিরেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল। আর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন।
আপিল বিভাগের আদেশের পর টুকুর আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি সাংবাদিকদের বলেন, “স্টে যেটা দিয়েছিলেন চেম্বার জাজ, সেটা কন্টিনিউ করেছেন। তার মানে হল উনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এই হল আজকের আদেশ।”
আর দুলুর প্রসঙ্গ টেনে এই আইনজীবী বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারায় উনাদের কনভিকশনটা সাসপেন্ড করে দিয়েছিল হাই কোর্ট। তো আজকের আদেশের পর দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে তারা নির্বাচন করতে পারছেন না।”