ভীতিকর অবস্থায় আছি: মির্জা আব্বাস

রাজধানীতে মির্জা আব্বাসসহ বিএনপি ও জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2018, 09:43 AM
Updated : 11 Dec 2018, 10:14 AM

তবে ঢাকা-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক প্রচারে নামার আগে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার বাড়ির চারপাশে অবস্থান নিয়ে আছে, তাতে তিনি এবং তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়  ভুগছেন।

শাহজাহানপুরে নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলনের পর মির্জা আব্বাস দুপুরে এলাকার ফুটপাত ও দোকানে দোকানে হেঁটে ধানের শীষের লিফলেট বিতরণ করেন। এই সময়ে সঙ্গে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসও ছিলেন। আফরোজা প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা-৯ আসনে।

মঙ্গলবার নিজের সংসদীয় আসনে গণসংযোগে মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।

প্রচার শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, মামলা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, তফসিল ঘোষণার পরে কোনো গ্রেপ্তার হবে না।

“আপনারা দেখেছেন যারা সকাল ১১টায় এসেছেন, আমার বাড়ির চারিদিকে প্রত্যেকটি গেইটে সাদা পোশাকে লোকজন দাঁড়িয়ে আছেন। এই অবস্থায় আমি এখন সত্যিকার অর্থে আমার নেতাকর্মী ও পরিবার পরিজন নিয়ে এক ভীতিকর অবস্থায় আছি। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, আমরা পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমার বাড়িতে আত্বীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কেউ আসতে পারে না। এটা একটা অমানবিক আচরণ।”

তিনি বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার নেতাকর্মী এখন কারাগারে। এই সময়ের মধ্যে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা হয়েছে দেড় শতাধিক, গ্রেপ্তার হয়েছে দুই শতাধিক। আমার সক্রিয় ওয়ার্কার সাড়ে তিন হাজার এখন কারাগারে। তাহলে একজন প্রার্থী কিভাবে নির্বাচনী প্রচার করবে?”

মঙ্গলবার নিজের সংসদীয় আসনে গণসংযোগে মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।

আফরোজা আব্বাসের ঢাকা-৯ আসনেও একই অবস্থা বলে জানান মির্জা আব্বাস।

নির্বাচনী প্রচার শুরু উপলক্ষে সোমবার শাহজাহানপুরের বাসায় বিকালে মিলাদের পর ফেরার পথে ২৫ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস।

স্বামী-স্ত্রী মিলে দু’টি আসন নিয়ে গেছেন- এমন প্রশ্ন আসতে পারে বলে নিজেই তার জবাব দেন মির্জা আব্বাস।

“আমার নির্বাচনী আসন ছিল পুরাতন ঢাকা-৬। যে আসনে আমি ও যে আসনে আমার সহধর্মিনী নির্বাচন করছেন এই আসনটি আমারই আসন ঢাকা-৬। এই আসনে আমি বরাবরই বিপুল ভোটে জয়লাভ করতাম।”

আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর আগে শাহজাহানপুরের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন মির্জা আব্বাস। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।

“সরকার ও তার নির্দেশে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই আসনটি ভেঙে টুকরো করা হয়। তারপরও এতে কোনো লাভ হয়নি। বাইরে থেকে ঢাকা-৮ ও ঢাকা-৯ আসনে কিছু অংশ এনেছে। তাতে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে আমি মনে করি না। আমি এখনো মনে করি জনগণ যদি নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পারেন তাহলে আমাদের দুইজনই বিপুল ভোটে জয়ের সম্ভাবনা আছে।”  

ঢাকা-৯ আসনে র প্রার্থী আফরোজা আব্বাস বলেন, “এই নির্বাচন আমাদের জন্য অনেক কষ্টের ও অনেক বেদনা। আমরা কখনো চিন্তাও করতে পারিনি যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না- এই অবস্থায় নির্বাচন করব। তারপরেও আমরা দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, সাজ্জাদ জহির, মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, নুরুল ইসলাম খান মাসুদ, মিজানুর রহমান সোহেল, নাহিদ নজরুল উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বাড্ডা হাই স্কুলের কাছ থেকে ঢাকা-১১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শামীম আরা বেগম প্রচার শুরু করেন। বিকালে ঢাকা-৬ আসনে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের শরিক গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী প্রচারে নামবেন বলে জানা গেছে।