আসন ভাগের রফায় আসতে ‘আরও সময় লাগবে’ জাপার

মহাজোটের ছয়টি শরিক দল থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারা প্রার্থী হবেন তা চূড়ান্ত হয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের বড় শরিক জাতীয় পার্টি কয়টি আসন পাবে সে রফা এখনও হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2018, 07:41 PM
Updated : 7 Dec 2018, 07:41 PM

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেছেন, মহাজোটের সঙ্গে আলোচনা ‘চূড়ান্ত’না হওয়ায় আরও দু একদিন সময় লাগবে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে।

শুক্রবার দুপুরে বনানীতে পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে রাঙ্গাঁ সাংবাদিকদের বলেন, “মহাজোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমরা চেয়েছিলাম ৫৪টি, কিন্তু সেটা এখন নেমে এসেছে ৪৫ এ। আজকে বা কালকের মধ্যে আমরা আলোচনা চূড়ান্ত করব।”

হু্সেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে ২০১৭ সালের মে মাসে গঠিত হয় সম্মিলিত জাতীয় জোট। এই জোটে যোগ দেয় নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় জোট, জাতীয় ইসলামী মহাজোট। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের একটি অংশ।

জোটের শরিকদের জন্যও ‘কিছু আসন ছাড়তে হতে পারে’ এমন আভাস দিয়ে রাঙ্গাঁ বলেন, “অ্যালায়েন্স ছাড়া যদি আমরা থাকতাম, তাহলে আমরা এখনই বলে দিতাম আমাদের আসন সংখ্যা কত। যেহেতু অ্যালায়েন্স একটা আছে আমাদের, সেহেতু অ্যালায়েন্সের সাথে আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলতে পারব না আসন সংখ্যা কত।”

নিজেদের জন্য ২৪০টি আসন রেখে ছয় শরিক দলের ১৬ প্রার্থীকে শুক্রবার চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে মহাজোটের নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগ।

এর মধ্যে ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টিকে পাঁচটি, জাসদ (ইনু) তিনটি, জাতীয় পার্টির (জেপি মঞ্জু) দুটি, তরিকত ফেডারেশনকে দুটি এবং জাসদকে (আম্বিয়া) একটি আসন ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আর মহাজোটের শরিক যুক্তফ্রন্ট পেয়েছে তিনটি আসন।

যে ১৭টি আসনে আওয়ামী লীগ একাধিক প্রার্থীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল, সেসব আসনেও একক প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদও নির্বাচন করতে চান।   

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সকালে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, শরিকদের জন্য ৫৫ থেকে ৬০টি ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি ৪০ থেকে ৪২টি আসন পেতে পারে।

তিনি বলেন, শরিক দলগুলো আরও বেশি আসন প্রত্যাশা করে। তবে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকে এর বেশি মনোনয়ন দিতে পারছে না। শরিক দলগুলো চাইলে অন্য আসনেও নিজেদের প্রতীকে প্রার্থী দিতে পারেন।

জাতীয় পার্টির ১২ জন সংসদ সদস্য এবার মহাজোট থেকে মনোনয়ন ‘পাচ্ছেন না’- এমন গুঞ্জনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে রাঙ্গাঁ বলেন, “১২ জন এমপির বিষয়ে আলোচনা চলছে। এখনও কিছু চূড়ান্ত করিনি আমরা। দেখা যাক।”

স্থানীয়ভাবে নিজেদের ভোটের পাশাপাশি মহাজোটের শরিকদের ভোট মিলিয়ে যাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, জাপা তাদেরই মনোনয়ন দেবে বলে মন্তব্য করেন মহাসচিব।

তিনি বলেন, আগামী দু একদিনের মধ্যে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহার লিখিত আকারে প্রকাশ করা হবে।

এর আগে গত ২০ অক্টোবর রাজধানীতে এক সমাবেশে জাতীয় পার্টির ১৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

তার ওই ১৮ দফার মধ্যে প্রাদেশিক সরকার গঠন করে প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ, নির্বাচন পদ্ধতি ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার ও পুনর্গঠন এবং সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

তখন তিনি বলেছিলেন, “এটা হল মুক্তি পথ, দেশের মুক্তির পথ, জাতির মুক্তির পথ।”