নৌকার পক্ষে গণভবনে তিন শতাধিক সাবেক আমলা

গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন প্রশাসনের তিন শতাধিক সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নয়জন সাবেক রাষ্ট্রদূতও রয়েছেন এই দলে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2018, 12:57 PM
Updated : 7 Dec 2018, 12:57 PM

আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে সশস্ত্র বাহিনীর দেড় শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার গণভবনে গিয়ে সমর্থন প্রকাশের পর বেসামরিক প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তারা সেখানে গেলেন।

অবসরপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিবসহ বিভিন্ন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য রয়েছেন ৫৭ জন, সাবেক রাষ্ট্রদূত নয়জন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব রয়েছেন ৭৫ জন।

এছাড়াও স্বাস্থ্য ক্যাডারের ১৪ জন, শিক্ষার ১৪ জন, প্রকৌশলী ২৭ জন, বন ও ডাক বিভাগের ১১ জন, পুলিশ ১০ জন, কর ও তথ্যের ১১ জন, কৃষি ক্যাডারের ৬৭ জন এবং টেলিকম, শুল্ক ও আবগারি, অডিট ও একাউন্টস, রেলওয়ে, খাদ্যের ১১ জনসহ মোট ৩০৭ জন রয়েছেন।

শুক্রবার বিকালে গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে তার নেতৃত্বের প্রতি আস্থার কথা জানান তারা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সূচনা বক্তব্যে সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা তার নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করতে এসেছি।”

শেখ হাসিনার টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে বাংলাদেশে উন্নয়নের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন তিনি।

বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলের কথা উল্লেখ করে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, “আমরা অন্ধকার সময়ে ফিরে যেতে চাই না। আপনার নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করছি। আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরিণত হবে সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশে।”

আসন্ন নির্বাচনে জনগণ শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ছাড়াও দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এ আর খান, প্রাইভেটাইজেমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান, সাবেক মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন ও মো. মেজবাহ উল আলম রয়েছেন।

সাবেক সচিব রয়েছেন ৫০ জন। তারা হলেন- আবু তাহের, হেমায়েত উদ্দিন তালুকদার, মাহবুব উল-আলম খান, আবদুল মালেক মিয়া, দেওয়ান জাকির হোসেন, সুনীম কান্তি বোস, আতাহার উল ইসলাম, মো. ওয়াজেদ আলী খান, মো. নুরুল হক, আ. মান্নান হাওলাদার, এ টি কে এম ইসমাইল, মো. শফিকুল আযম, কামরুন নেসা খানম, মো. মিজানুর রহমান, খোন্দকার আসাদুজ্জামান, মো. কাজী আখতার হোসেন, আরাস্তু খান, এম এ কাদের সরকার, ড. চৌধুরী মো. বাবুল হাসান, এ এইচ এম মাসুদ সিদ্দিকী, মো. আজিজুর রহমান, কাজী আখতার উদ্দিন আহমেদ, এ এল এম আব্দুর রহমান, মো. হুমায়ুন খালিদ, আনোয়ার ফারুক, মো. মনসুর আরী শিকদার,  মো. জহুরুল আলম,রীতি ইব্রাহিম, নজরুল ইসলাম খান, ড. খোন্দকার শওকত হোসেন, মিকাইল শিপার, খোরশেদ আলম চৌধুরী, এম এ হান্নান, এ কে এম আমির হোসেন, নুরুল নবী তালুকদার, ফখরুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, শ্যামল কান্তি ঘোষ, এ এম বদরুদ্দোজা,  শিরিন আখতার, খন্দকার ইফতেখার হায়দার, কায়কোবাদ হোসেন, আবু মেহাম্মদ মোস্তফা কামাল, নাজমুল ইসলাম, মমতাজ আলা শাকুর আহমেদ, নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, অশোক মাধব রায়, প্রশান্ত কুমার রায়, ড. পারভেজ ইমদাদ ও শামসুল হক।
সাবেক রাষ্ট্রদূত রয়েছেন নয়জন। তারা হলেন- সোহরাব হোসেন, এ টি এম নজরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মো. আজিজুল হক, গোলাম মোহাম্মদ, মো. আব্দুল হান্নান, আতিকুর রহমান, ইকতিয়ার চৌধুরী ও ওয়াহিদুর রহমান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক শাহ মুনির হোসেন ও ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুলহক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. নোমানুর রশীদ, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ড. রাম দুলাল রায়, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. কবির আহমেদ ভূঁইয়া, স্থাপত্য অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান স্থপতি আহসানুল হক স্বপন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম মমতাজ উদ্দিন, ডি.পি.এইচ. ই-এর সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক প্রভাস চন্দ্র সাহা রয়েছেন অনুষ্ঠানে।

পুলিশের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. সামসুদ্দোহা খন্দকার, অমূল্য ভূষণ বড়ুয়া ও আবদুল মান্নান রয়েছেন।

অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক সাবেক কর্মকর্তা প্রবেশের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনের ব্যাঙ্কোয়েট হলে আসেন। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তার সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামও মঞ্চে রয়েছেন।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ আবার ভোটে জিততে আশাবাদী।

এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গত ২৭ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নৌকার পক্ষে মাঠে নামার অঙ্গীকার করেন।