আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করতে সশস্ত্র বাহিনীর দেড় শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার গণভবনে গিয়ে সমর্থন প্রকাশের পর বেসামরিক প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তারা সেখানে গেলেন।
অবসরপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিবসহ বিভিন্ন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য রয়েছেন ৫৭ জন, সাবেক রাষ্ট্রদূত নয়জন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব রয়েছেন ৭৫ জন।
এছাড়াও স্বাস্থ্য ক্যাডারের ১৪ জন, শিক্ষার ১৪ জন, প্রকৌশলী ২৭ জন, বন ও ডাক বিভাগের ১১ জন, পুলিশ ১০ জন, কর ও তথ্যের ১১ জন, কৃষি ক্যাডারের ৬৭ জন এবং টেলিকম, শুল্ক ও আবগারি, অডিট ও একাউন্টস, রেলওয়ে, খাদ্যের ১১ জনসহ মোট ৩০৭ জন রয়েছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সূচনা বক্তব্যে সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা তার নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করতে এসেছি।”
শেখ হাসিনার টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে বাংলাদেশে উন্নয়নের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলের কথা উল্লেখ করে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, “আমরা অন্ধকার সময়ে ফিরে যেতে চাই না। আপনার নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করছি। আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরিণত হবে সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশে।”
আসন্ন নির্বাচনে জনগণ শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ছাড়াও দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এ আর খান, প্রাইভেটাইজেমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান, সাবেক মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন ও মো. মেজবাহ উল আলম রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক শাহ মুনির হোসেন ও ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুলহক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. নোমানুর রশীদ, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ড. রাম দুলাল রায়, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. কবির আহমেদ ভূঁইয়া, স্থাপত্য অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান স্থপতি আহসানুল হক স্বপন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আজিজুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম মমতাজ উদ্দিন, ডি.পি.এইচ. ই-এর সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক প্রভাস চন্দ্র সাহা রয়েছেন অনুষ্ঠানে।
পুলিশের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. সামসুদ্দোহা খন্দকার, অমূল্য ভূষণ বড়ুয়া ও আবদুল মান্নান রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক সাবেক কর্মকর্তা প্রবেশের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনের ব্যাঙ্কোয়েট হলে আসেন। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তার সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামও মঞ্চে রয়েছেন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ আবার ভোটে জিততে আশাবাদী।
এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গত ২৭ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নৌকার পক্ষে মাঠে নামার অঙ্গীকার করেন।