মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে খালেদার আপিল

দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2018, 07:21 AM
Updated : 6 Dec 2018, 11:38 AM

ফেনী-১ আসনের জন্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বগুড়া-৬ ব্যারিস্টার নওশাদ জমির এবং বগুড়া-৭ আসনের জন্য অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এই আপিল জমা দেন। 

ফেনী ও বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা গত ২ ডিসেম্বর যাচাই বাছাই শেষে খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রই বাতিল ঘোষণা করেন। দুর্নীতি মামলায় দুই বছরের বেশি সাজা হওয়ার বিষয়টিকেই মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তারা।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বিএনপি নেতারা আশা করছিলেন, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে তিনি ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। সে অনুযায়ী ফেনী ও বগুড়ার তিনটি আসনে তাকে ধানের শীষের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু গত সপ্তাহে হাই কোর্টে এক মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারও দুই বছরের বেশি সাজা বা দণ্ড হলে সেই দণ্ড বা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, যতক্ষণ না আপিলে ওই দণ্ড বাতিল বা স্থগিত হয়।

এর ফলে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতার আপিল করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ আটকে যায়। একজন বিএনপি নেতা ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলেও সর্বোচ্চ আদালতের সাড়া পাননি। 

তবে খালেদার আইনজীবী কায়সার কামাল বলছেন,রিটার্নিং অফিসার মনোনয়নপত্র বাতিল করলেও ইসির আপিলে তা ফিরে পাওয়া যাবে বলেই তারা আশা করছেন।

নির্বাচন কমিশনে আপিল করার পর সাংবাদিকদের বলেন, “রিটার্নিং অফিসার আইন বহির্ভূতভাবে, অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। এটা সরকারের ষড়যন্ত্রেরই অংশ। আমাদের কাছে প্রদত্ত ক্ষমতা বলে তিনটি আসনে প্রার্থীর পক্ষে আপিল দায়ের করলাম।”

আইন নিজস্ব গতিতে চললে খালেদা জিয়া প্রার্থিতা ফিরে পাবেন- এমন আশা প্রকাশ করে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার বলেন, “নির্বাচন কমিশন ফেয়ার ডিসিশন নিলে খালেদা জিয়ার পক্ষে রায় পাব আশা করি। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য জাতি অপেক্ষা করছে। খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন হলে তা প্রহসনের নির্বাচন হবে। দেশ ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্যে খালেদা জিয়ার সুবিচার চাই আমরা।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে। খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র যে গ্রাউন্ডে বাতিল হয়েছে তা এখানে প্রযোজ্য নয়। ইসি সংবিধান ও আইন অনুসরণ করলে এবং বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে বিশ্বাসযোগ্য সিদ্ধান্ত নিলে খালেদা জিয়া প্রার্থিতা ফিরে পাবেন।”

আদালতের আদেশের পরও কীভাবে আপিলে খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার সুযোগ থাকতে পারে- তা জানতে চান সাংবাদিকরা।

কায়সার কামাল বলেন, “একেকটা কেইস একেক রকম। খালেদা জিয়ার কেইসটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমরা আশা করি, ইসি আইন ও সংবিধান অনুসরণ করবেন। ইসি নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। দেশনেত্রীর বিষয়ে বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে, পক্ষপাতিত্ব না করে যেভাবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করবে ইসি।”