প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের আশা পূরণ হয়েছে: সিইসি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও প্রতিযোগিতামূলক’ হবে বলে যে আশা সবাই করছিল, তা ইতোমধ্যে পূরণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2018, 07:12 AM
Updated : 3 Jan 2019, 02:43 PM

৩০০ নির্বাচনী আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থীদের কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ‘লঙ্ঘন করেননি’ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেই তিনি বিশ্বাস করেন।

সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা ভোটের দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের প্রশিক্ষকদের নিয়ে বৃহস্পতিবারএক কর্মশালায় সিইসি তার এরই বিশ্বাসের কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা যেটা আশা করেছিলাম একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে, আমাদের সে আশা পূরণ হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম একটা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম এটা অংশগ্রহগণমূলক নির্বাচন হবে। একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।”

তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার সুযোগ শেষ হয়েছে বুধবার। সারা দেশে ৩০০ আসনে মোট ৩০ ৭৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে বলে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে নিয়ে এবারও তফসিলের আগে সংশয় ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তারাও নির্বাচনে এসেছে।

ইসির বিরুদ্ধে অনাস্থার কথা বিএনপি এখনও বলছে, তবে দলটির শীর্ষ নেতারা কোনো অবস্থাতেই ভোটের মাঠ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।  

এ পর্যন্ত নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী ও অত্যন্ত সম্মানী’ প্রার্থীরা বুধবার রিটার্নিং কর্মকর্তারা কার্যালয়ে গিয়ে ‘সৃশঙ্খলভাবে’ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, টেলিভিশনে সেই দৃশ্য তিনি দেখেছেন।  

“গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেনি। কেউ চারজন, পাঁচজন, সাতজনের বেশি লোক নিয়ে ভেতরে ঢোকেনি। বাইরে হয়ত সমর্থক কিছু বেশি ছিল। সেটা থাকতেই পারে, একজন প্রার্থী সমর্থক নিয়ে আসতেই পারে। তাও সেটা মোটরশোভাযাত্রা বা গাড়ি শোভাযাত্রা বা শোডাউনের পর্যায়ে পড়ে না।”

নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছিল, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কোনোভাবেই ৫ থেকে ৭ জনের বেশি কর্মী-সমর্থক নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে যাওয়া যাবে না। কোনো ধরনের ‘মিছিল শোডাউন’ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রার্থীরা তা মেনে চলায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপগুলোও সুষ্ঠুাভাবে শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সিইসি হুদা। 

তিনি বলেন, “এখন বিশ্বাস করার সুযোগ এসেছে, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তারা নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে এবং নির্বাচনী কর্মকর্তারা যারা মাঠে কাজ করবেন তাদের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। সেই পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি মনে করছি।”

সিইসি বলেন, সারা দেশে মনোনয়ন জমা দিতে এসে কোথাও কোনো গণ্ডগোল হয়নি, বাধা দেওয়া হয়নি। একটি ‘আনন্দঘন’ পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।

“রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে বিভিন্ন দল-মতের লোকজনের মধ্যে যখন দেখা হয়েছে, নিজেদের সাথে কোলাকুলি করেছে। এটাই হল গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হল।”

নির্বাচনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “আপনারা যারা মাঠে কাজ করবেন, তাদের কারণে যেন প্রার্থীদের আশা, আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা ব্যাহত না হয়। সেই দায়িত্বটা প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের জানানো আপনাদের কর্তব্য। সেই প্রশিক্ষণ প্রদান করা আপনাদের দায়িত্ব।

নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানান, সাত লাখের বেশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। নির্বাচনের ১০দিন আগে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে।

দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে অন্যদের মধ্যে ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক বক্তব্য দেন।