রোববার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে মনোনয়নের প্রাথমিক প্রত্যয়নপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম অন্তত ২৩৮ জনের তালিকা পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে প্রত্যয়নপত্র বিতরণের সময় উপস্থিত আওয়ামী লীগের কর্মীদের মুখে আলোচনা ছিল ‘হেভিওয়েট’ কোন কোন নেতা বাদ পড়লেন।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বি এম মোজাম্মেলসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম মনোনীতদের তালিকায় পাওয়া যায়নি।
গাজীপুরে প্রবীণ নেতা রহমত আলী এবার মনোনয়ন পাচ্ছেন না।
নেত্রকোনায় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের আসনে দলের টিকেট পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও ও শেরেবাংলা নগরের একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৩ আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানকের বদলে মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন সাদেক খান। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান মোহাম্মদপুর এলাকার কাউন্সিলর ছিলেন দীর্ঘদিন।
দলের আরেক যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমানের আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সচিব ও বর্তমানে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন।
বয়সের কারণে মনোনয়নের তালিকায় নাম নেই সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মনোনয়ন ফরম কিনলেও তিনিও ভোট করতে অনাগ্রহী ছিলেন। তার সিলেট-১ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রত্যয়ন পেয়েছেন তার ভাই এ কে আবদুল মোমেন।
শারীরিক অসুস্থতায় বিদেশে চিকিৎসাধীন দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দলের টিকিট দেওয়া হলেও তার সঙ্গে আরেক প্রার্থীও রাখা হয়েছে।
একইভাবে যুগ্ম প্রার্থীর তালিকার মধ্যে রয়েছেন সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর এবং কয়েকবার নির্বাচিত সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাখ সম্ভুও রয়েছেন যুগ্ম তালিকায় ।
যুগ্মভাবে মনোনয়নের তালিকায় রয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পযটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল।
এদের মধ্যে কাকে প্রার্থী হিসেবে বাছাই করা হবে কা এখনো নিশ্চিত না।
৮৩ বছর বয়সী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আসনে মনোনয়ন কে পাচ্ছেন, তা রোববার পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি।
যে সব এমপি বাদ
দলের আলোচিত বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।
কক্সবাজারে আবদুর রহমান বদির বাদ পড়ার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। ওই আসনে তার স্ত্রী শাহীনা আক্তার চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
বাদ পড়াদের মধ্যে রয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোলাম রাব্বানী ও গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, নওগাঁর আব্দুল মালেক, নাটোরের আবুল কালাম, সিরাজগঞ্জের গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন, পাবনার খন্দকার আজিজুল হক আরজু, ঝিনাইদহের নবী নেওয়াজ, কুষ্টিয়ার আবদুর রউফ ও রেজাউল হক চৌধুরী, যশোরের মনিরুল ইসলাম।
যশোর ও ঝিনাইদহে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত সাংসদ স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তাহজীব আলম সিদ্দিকীকে এবার নৌকার প্রার্থী করা হচ্ছে।
মাগুরায় বাদ পড়েছেন এ টি এম আব্দুল ওয়াহাব, বাগেরহাটে মীর শওকাত আলী বাদশা এবং খুলনায় বাদ পড়ছে মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ও শেখ মো. নূরুল হক।
পটুয়াখালীর সব আসনেই পরিবর্তন হতে চলেছে। মহাজোটের প্রার্থী রুহুল আমীন হাওলাদারের আসনে নৌকার টিকেট পেয়েছেন আসটির সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়া। আ স ম ফিরোজের সঙ্গে যুগ্মভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে খোন্দকার শামসুল হক রেজাকে।
বর্তমান সংসদ সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন ও মো. মাহবুবুর রহমানও পটুয়াখালীতে নৌকার প্রার্থী তালিকায় ঢুকতে পারেননি। পিরোজপুরে বাদ পড়েছেন এ কে এম এ আউয়াল (সাইদুর রহমান)। বরিশালে বাদ পড়েছেন বেগম জেবুন্নেছা আফরোজ।
ঢাকা পাশের টাঙ্গাইলে চারটি আসনের বর্তমান সাংসদরা বাদের তালিকায় ঢুকেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সচিব খোন্দকার আসাদুজ্জামান, খন্দকার আবদুল বাতেন, অনুপম শাহজাহান জয়।
জামালপুরে সাংসদ রেজাউল করিম হীরা দলীয় প্রত্যায়নে যুগ্ম তালিকায় রয়েছেন।
নেত্রোকোনায় আরিফ খানের জয়ের পাশাপাশি ছবি বিশ্বাস ও ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু বাদ পড়েছেন।
ঢাকার ধামরাইয়ের এম এ মালেক বাদ পড়েছেন। ঢাকায় গতবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হাজি মোহাম্মদ সেলিম যুগ্মভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন।
কিশোরগঞ্জে সোহরাব উদ্দিন এবং গাজীপুরে বাদ পড়েছেন এডভোকেট রহমত আলী, ফরিদপুরে আবদুর রহমান, মাদারীপুরে বাহাউদ্দিন নাছিম দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন না।
শরীয়তপুরে তিন আসনের দুটিতেই পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখানে বাদ পড়েছেন বি এম মোজাম্মেল ও শওকত আলী। মৌলভীবাজারে সৈয়দা সায়রা মহসীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফয়জুর রহমান, মোহাম্মদ আমির হোসেন দলীয় মনোনয়নের তালিকায় ঢুকতে পারেননি।