বিএনপির বিরুদ্ধে ইসিতে নালিশ আওয়ামী লীগের

ভোট পেছানোর ‘ষড়যন্ত্রের’ অংশ হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংঘাত ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2018, 02:39 PM
Updated : 14 Nov 2018, 03:24 PM

এই ধরনের ঘটনা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল উল্লেখ করে বিএনপির বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বুধবার সিইসির সঙ্গে দেখা করে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে যায় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। 

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কো চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম নেতৃত্বাধীন এই দলটি সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে  এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশের উপর হামলায় নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন হয়েছে। এই অপরাধের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, “এখানে এসে শান্তির কথা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির কথা বলে; আর ২০১৩ সালের মতো, সন্ত্রাসের দিকে ফিরে যাব? এগুলো কীসের আলামত?

“আমরা ইসিকে বলেছি, নয়া পল্টনে সংগঠিত  সন্ত্রাসী ঘটনা আচরণবিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থি।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের মনোনয়ন ফরম বিক্রিতে নয়া পল্টন সরগরম থাকার মধ্যে বুধবার দুপুরে বিএনপিকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসময় পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

ঢাকার নয়াপল্টনে বুধবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় বিএনপি কর্মীরা। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন

বিএনপি নেতারা এই সংঘর্ষের জন্য পুলিশকে দায়ী করেছেন। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, হেলমেটধারী যে যুবকরা হামলায় যুক্ত ছিল, তারা বিএনপির কেউ নয়।

বিএনপি মহাসচিব ইসিতে সাংবাদিকদের বলেন, “এ ধরনের পরিস্থিতি করে সরকার নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করছে।”

নয়া পল্টনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার চিত্র তুলে ধরে এইচ টি ইমাম বলেন, আচরণ বিধির ১৭ ও ১৮ ধারা অনুযায়ী তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করলে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার জরিমানা এবং সর্বোচ্চ শাস্তি প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ইসির রয়েছে। রাজনৈতিক দল আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

ভোটের তারিখ পেছানোয় বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবির বিরোধিতাও করেছে আওয়ামী লীগ।

বিদেশি পর্যবেক্ষক, নতুন ভোটার, বই বিতরণ, ইজতেমার প্রসঙ্গ টেনে ভোট না পেছানোর দাবি জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।

সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি এইচ টি ইমামসহ আওয়ামী লীগের নেতারা

এইচ টি ইমাম বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে ভোট পেছাতে যুক্তি উপস্থাপন করছে অনেকেই। খেয়াল করছেন না ভোটের পরে কী হতে পারে? আমরা সার্বিক বিষয়ে বলেছি নির্বাচন পেছানোর দাবি অমূলক; আর একদিনও পেছানো ঠিক হবে না। “

আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন মশিউর রহমান, দীপু মনি, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিপ্লব বড়ুয়া, দেলোয়ার হোসেন, কাজী ইমাম, রশিদুল আলম, সেলিম মাহমুদ, মারুফা আক্তার পপি, মোস্তাফিজুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলা।

সিইসি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।