সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইভিএম প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এই অনুষ্ঠানেই এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ ঘোষণা করেন সিইসি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২৩ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের দিন রেখে তফসিল ঘোষণার সময় সিইসি শহরাঞ্চলের কিছু কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। ইভিএম কেন্দ্রে সেনা রাখারও পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
ইভিএম নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থন থাকলেও বিরোধিতা ছিল বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের।
ইভিএম প্রদর্শনীর উদ্ভোদনী অনুষ্ঠানে কে এম নূরুল হুদা বলেন, “রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান করি আপনারা আসুন, আপনাদের মধ্যে যদি কোনো প্রযুক্তিসম্পন্ন ব্যক্তি থাকে তাকে নিয়ে আসুন। পরীক্ষা করুণ এই আহ্বান করছি। আমাদের যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি থাকে তা শুধরে দিন। তবে এটা থেকে পিছিয়ে যাওয়ার আমাদের আর সুযোগ নেই। এটাকে নিয়ে আমাদের সামনে এগোতে হবে, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি এবং আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।”
“মানুষ ভোট দিতে চায়। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের জিম্মাদার। নির্বাচন কমিশনের ওপর ভোটারদের ভোট প্রয়োগের মেকানিজম পরিচালনা নির্ভর করে।”
আগে স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনে সীমিত পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করেছে নির্বাচন কমিশন। এবারই প্রথম জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
যেসব এলাকায় ইতোমধ্যে কোনো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে সেসব এলাকার ভোটাররা এটিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে দাবি করেন সিইসি।
“আমরা যে ইভিএম প্রদর্শন করেছি, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেখানে ইভিএম ব্যবহার করেছি, কোনো ভোটার কোনো আপত্তি করেনি, তারা খুশি ছিলেন। আমাদের ভোটাররা যদি খুশি থাকে, আমরাও খুশি। ভোটাররা যদি নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারেন, আমরা নিশ্চিন্ত।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “কোনো গোয়ালা তার দইকে খারাপ বলে না, একইভাবে (ইভিএম ব্যবহার) আমরাও খারাপ বলি না। আপনারা খেয়ে দেখেন, যদি খারাপ হয় তাহলে কেউ খাবেন না। তখন আমরা এমনিতেই ফেলে দিব।”
ইভিএম প্রদর্শনীর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গেলে সবকিছুতে একটা ভীতি কাজ করে, এজন্য এই প্রদর্শনী। আমরা ইভিএমে কোনো ভুল-ত্রুটি দেখিনি, আপনারা যদি কেউ কোনো ভুল-ত্রুটি ধরতে পারেন তাহলে এই মেশিন আমরা বর্জন করব।"
ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে ইভিএম বর্জনের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “ওইসব দেশ থেকে আমরা ৮০-১০০ বছর পিছিয়ে আছি।”
ইতোমধ্যে কয়েকটি বিভাগীয় শহরে ইভিএম মেলা প্রদর্শনী হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “ইভিএমে ভোট দিয়ে কেউ যদি এর কোনো ভুল-ত্রুটি বের করে প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমরা এ মেশিন বর্জন করব।”
ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় ব্ক্তব্য দেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলেন, “ইভিএম বিষয়ে আপনারা রাজনৈতিক দলগুলোকে আবার ডাকেন। প্রয়োজনে ধরে নিয়ে আসুন। তাদেরকে দেখান।
এই বিষয়ে কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, “ফিঙ্গার প্রিন্ট মেলাতে সময় লাগলে প্রয়োজনে ভোটগ্রহণ বিকাল ৪টার পর পর্যন্ত করা হবে। কারণ ফলাফল পেতে আমাদের সময় লাগবে মাত্র কয়েক মিনিট।”
নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইভিএম নিয়ে মূল উপস্থাপনা করেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম।