বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদ নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনের দাবি জানালেও তা উপেক্ষিত হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
Published : 08 Nov 2018, 07:38 PM
বৃহস্পতিবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা স্পষ্ট করেছেন, এবারও সেনা মোতায়েন হবে আগের মতোই। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর বিচারিক ক্ষমতা থাকছে না।
তিনি বলেন, “নির্বাচন চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসনকে যথা-প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে।”
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরাবর সেনা মোতায়েন হলেও সেনাসদস্যরা বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতেই নিয়োজিত থাকে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়ার দাবি তোলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপেও। তখন একে সংবিধান পরিপন্থি বলে ক্ষমতাসীন ১৪ দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
ইসি বলছে, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মপরিধি এবং কত সময় তারা নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করবে- সে বিষয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছিল।
আগেও জাতীয় নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ছিল সেনাসদস্যরা (ফাইল ছবি)
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০০১ সালের আগে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন সংক্রান্ত কোনো বিধান আরপিওতে ছিল না। তারপরও ১৯৭৩ থেকে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরও জেলা/থানা/উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়।
২০০১ সালের এক অধ্যাদেশে নির্বাচনে ‘ল’ এনফোর্সিং এজেন্সির’ সংজ্ঞায় ‘ডিফেন্স সার্ভিস’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে তা বাদ দেওয়া হয়।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় সাত লাখ কমকর্তা নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে ভাষণে জানান সিইসি।
তিনি বলেন, প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী থেকে ছয় লক্ষাধিক সদস্য মোতায়েন করা হবে। তাদের মধ্যে থাকবে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, কোস্ট গার্ড, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।
ভোটগ্রহণের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও একাগ্রতার উপর বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন নূরুল হুদা।
“দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায়ী কমকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”