গ্রিসের কাছে ‘সিরিয়াস’ প্রস্তাব চায় জার্মানি, ফ্রান্স

গ্রিসের জনগণ ভোটের মাধ্যমে দাতাদের ঋণের শর্ত প্রত্যাখ্যান করার পরদিন দেশটিকে নতুন ‘বাস্তবসম্মত’ প্রস্তাব নিয়ে দ্রুত আলোচনায় ফেরার তাগিদ দিয়েছে ইউরোজোনের প্রভাবশালী দুই দেশ জার্মানি ও ফ্রান্স।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2015, 00:40 AM
Updated : 17 Nov 2015, 11:59 AM

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দ বলেছেন, সংস্কারের শর্ত মেনে গ্রিস যদি সত্যিই ঋণ পেতে চায় এবং তারা যদি ইউরো পরিবার থেকে ছিটকে পড়তে না চায়, তাহলে এথেন্সকে ‘দ্রুত’ পদক্ষেপ নিতে হবে। আর সেই প্রস্তাব হতে হবে 'সিরিয়াস ও বিশ্বাসযোগ্য’।        

রয়টার্সের এক প্রতিবেনে বলা হয়, এই চাপ মাথায় নিয়েই মঙ্গলবার ইউরোজোনের সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস, যার আহ্বানে রোববার দাতাদের প্রস্তাবকে ‘না’ বলে দিয়ে এথেন্সকে দরকষাকষির নতুন শক্তি ‍যুগিয়েছে গ্রিসের জনগণ।    

অবশ্য তীব্র তারল্য সঙ্কটে ভুগতে থাকা গ্রিসের ব্যাংকগুলো গত সপ্তাহের মতো এই মঙ্গল ও বুধবার বন্ধ থাকবে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। 

২০১০ সাল থেকে ইউরোপীয় কমিশন, ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক ও আইএমএফের কাছ থেকে দুই দফায় প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ নেয় গ্রিস। তবে ওই টাকার জন্য পেনশন, বেতন ও সরকারি সেবায় কাটছাঁটসহ কঠিন কৃচ্ছ্বতার শর্ত মেনে নিতে হয় গ্রিসের জনগণকে।

গ্রিসকে দেওয়া ইউরোজোনের চলতি বেইল আউটের মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০ জুন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে নেওয়া ঋণের ১৬০ কোটি (১ দশমিক ছয় বিলিয়ন) ইউরো পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় একই দিনে খেলাপি হয়ে যায় গ্রিস।

নতুন করে সহায়তার জন্য (বেইল আউট) গ্রিসকে কর বাড়ানোর পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক ব্যয় কমানোসহ কঠিন আর্থিক পুনর্গঠনের শর্ত দেয় ইউরোজোন। ‘মোড়লদের’ এসব কঠিন শর্তের বিরোধিতা করে ক্ষমতায় আসা বামপন্থি সিরিজা পার্টি বিষয়টি গণভোটে দেয় এবং রোববার ৬১ শতাংশ ভোটার দাতাদের শর্ত প্রত্যাখ্যান করে ‘না’ ভোট দেয়।

গ্রিসের গণভোটের ‘অপ্রত্যাশিত’ ফলাফলে কার্যত হতভম্ভ ফ্রান্স ও জার্মানি মঙ্গলবার ইউরো জোনের নেতাদের এক জরুরি বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকের আগে সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর মের্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ প্যারিসে বৈঠকে বসেন।

বৈঠকের পর মের্কেল বলেন, "ঋণ সংকটের বিষয়ে আমরা এখন গ্রিক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আশা করছি; এমন একটা রূপরেখা, যা গ্রিসকে সমৃদ্ধ অবস্থায় ফিরতে সহায়তা করবে।"

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গণভোটে বিজয়ের পর ইউরোজোনের সঙ্গে গ্রিস সরকারের আলোচনায় গতি আনা এবং সমঝোতার পথ সুগম করতে গ্রিস সরকারকেও উদ্যোগী হতে দেখা যাচ্ছে।

দেশটির অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারুফাকিস সোমবার পদত্যাগ করেন, যিনি চাঁছাছোলা বক্তব্য-বিবৃতির কারণে ইউরো জোনের অংশীদারদের বিরাগভাজন হয়েছেন বলে মনে করা হয়।

গণভোটে ‘না’ ভোটের পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালানো ভারুফাকিস ঋণদাতাদের ‘সন্ত্রাসী’ও বলেছিলেন।

তার জায়গায় নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে সোমবারই দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন এসক্লিদিস সাকালোতস, যিনি এর আগে ঋণ সহায়তা পেতে গ্রিসের পক্ষে দাতাদের সঙ্গে আলোচনার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।