গ্রিস আলোচনায় বসতে প্রস্তুত: অ্যালেক্সিস সিপ্রাস

দাতাদের শর্ত মেনে ঋণ সহায়তা না নেওয়ার পক্ষে গণভোটে বেশিরভাগ নাগরিকের সায় পেয়ে উচ্ছ্বসিত গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস বলেছেন, তার দেশ আলোচনায় বসার জন্য মুখিয়ে আছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2015, 11:11 PM
Updated : 6 July 2015, 09:17 AM

তিনি মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে বন্ধ হয়ে পড়া ব্যাংকগুলো খুলে দেওয়ার পথ উন্মোচিত হলো।

কঠোর ব্যয় সঙ্কোচনের শর্ত মেনে দাতাদের কাছ থেকে ঋণ সহায়তা নেওয়ার পক্ষ-বিপক্ষ যাচাইয়ে রোববার গ্রিসে যে গণভোট হলো তার সর্বশেষ ফলাফলে এগিয়ে রয়েছে ‘না’ ভোট।

স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হয়ে একটানা সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে।

টালমাটাল অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা বামপন্থী দল সিরিজার প্রধান অ্যালেক্সিস সিপ্রাস বলেন, জনগণ যে রায় দিয়েছেন তা ইউরোপের সঙ্গে বিরোধের জন্য নয়, বরং একটি উপযুক্ত সমাধান খুঁজে বের করার জন্য।

জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ইউরোপের সঙ্গে বিরোধের জন্য নয়, বরং সংকট থেকে উত্তোরণে একটি উপযুক্ত, গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করার ভার আপনারা আমাকে দিয়েছেন।”

সঙ্কটময় মুহূর্তে জনগণের এই সাহসী রায়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।

অ্যালেক্সিস সিপ্রাস সামগ্রিক পরিস্থিতি সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সামনে তুলে ধরতে বৈঠক ডাকার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ করবেন বলেও জানান।

২০১০ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আইএমএফ থেকে দুটি বেইল আউটে প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ইউরো নেয় গ্রিস। এই অর্থে চলতে থাকে দেশটি, যদিও তার জন্য নাগরিকদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ সময়ে পেনশন, বেতন ও সরকারি সেবায় কাটছাঁট হয় গ্রিসে।

নতুন করে সহায়তার জন্য (বেইল আউট) গ্রিসকে কর বাড়ানোর পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক ব্যয় কমানোসহ কঠিন আর্থিক পুনর্গঠনের শর্ত দেয় ইউরোজোন।

তবে দাতাদের দেওয়া শর্তগুলো মর্যাদাহানিকর বলে সমালোচনা করে আসছে ক্ষমতাসীন সিরিজা পার্টি।

দলটির নেতাদের অভিমত, গণভোটে শর্তগুলো নাকচ হলে দাতাদের সঙ্গে দ্রুত নতুন চুক্তিতে যেতে সরকারকে সুযোগ করে দেবে।

অবশ্য আন্তর্জাতিক দাতারা সতর্ক করেছেন যে, ‘না’ ভোটের বিজয় গ্রিক ব্যাংকগুলোর তহবিল বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং তা গ্রিসকে একক মুদ্রা ইউরো থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে নিয়ে যাবে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে হ্যাঁ’ পক্ষের সমর্থকদের শঙ্কা, দাতাদের প্রস্তাব মেনে না নিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থার পতনের মধ্য দিয়ে পুরনো ড্রাকমা মুদ্রায় ফিরে যাওয়া তাদের আরও বেশি বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিবে।

রোববার দিনব্যাপী এই গণভোটে গণনাকৃত অর্ধেকের বেশি ভোটে ৬১ শতাংশ রায় পড়েছে ‘না’ এর পক্ষে, অর্থ্যাৎ গ্রিসবাসী এ পর্যন্ত দাতাদের শর্ত নাকচের পক্ষেই রায় দিয়েছেন।