সংকটের প্রান্তে গ্রিস 

বিদেশি ঋণদাতাদের সঙ্গে বিবাদের পর আর্থিক বিশৃঙ্খলার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে গ্রিস, পরিস্থিতির চাপে দেশটির ব্যাংকিং খাত বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। 

>>রয়টার্স
Published : 30 June 2015, 08:51 AM
Updated : 30 June 2015, 08:51 AM

এ পরিস্থিতিতে সোমবার দেশটির প্রায় লাখখানেক মানুষ বিদেশি ঋণদাতাদের কঠিন আর্থিক পুনর্গঠনের শর্তে সহায়তা (বেইল আউট) প্রস্তাব প্রত্যাখান করার সরকারি সিদ্ধান্তের সমর্থনে সমাবেশ করেছে। 
 
মঙ্গলবার (৩০ জুন) চলতি বেইল আউটের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ইউরোজোনের নতুন বেইল আউট প্রস্তাবে কঠোর ব্যয়সঙ্কোচনের শর্ত থাকায় গ্রিসের বামপন্থী সরকার তাতে সায় দেয়নি। ফলে ইউরোজোনোর সঙ্গে গ্রিসের সর্বশেষ বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। 
 
অপরদিকে বেইল আউটের মেয়াদ বাড়ানোর গ্রিসের প্রস্তাবেও রাজি হয়নি ঋণদাতারা। এ অবস্থায় নতুন বেইল আউটের প্রস্তাব নিয়ে গণভোটের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সি সিপ্রাস। দেশটির পার্লামেন্টও প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের পক্ষে সায় দিয়েছে। 
 
কয়েকশ’ কোটি ইউরোর বেইল আউট তহবিল নেয়ার জন্য ঋণদাতাদের দেয়া কঠোর শর্তগুলো গ্রহণ নাকি প্রত্যাখ্যান করা হবে, আগামী রোববারের গণভোটে সেই সিদ্ধান্তই জানাবে দেশের মানুষ। 
 
গণভোটের ফলাফলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন বললেও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছেন সিপ্রাস। তিনি জানিয়েছেন, ‘পুরো মেয়াদের জন্য ব্যয়সঙ্কোচন’ নীতি তদারক করতে নিয়োজিত একটি সরকার পরিচালনা করবেন না তিনি।
 
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “গ্রিক জনগণ যদি একজন লাঞ্ছিত প্রধানমন্ত্রী চান, তাহলে সরকারের বাইরে এ রকম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অনেকেই তৈরি আছেন। কিন্তু আমি তা হব না।” 
 
এ সময় গ্রিসের রাজধানী আথেন্সে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। 
 
মঙ্গলবারের মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে নেয়া ঋণের ১৬০ কোটি ইউরোর একটি কিস্তি পরিশোধ করতে হবে গ্রিসকে। এটি করতে না পারলে ঋণ খেলাপি হবে গ্রিস, সেক্ষেত্রে ইউরোজোনে গ্রিসের সদস্যপদ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। 
 
গ্রিস একক মুদ্রা ইউরোতে গ্রিসের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভোট গ্রহণ করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ইউরোপীয় নেতা ও কৌশল প্রণেতারা। 
  মঙ্গলবার দিনটির শুরু হয়ে যাওয়ায় আর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সংকট ঘনীভূত হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ব্যাংকগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার, এটিএম বুথে থেকে অর্থ তোলার সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, সোমবার দেশটির পুঁজিবাজার বন্ধ রেখেছে। 
 
সার্বিক অনিশ্চয়তার মুখে গ্রিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার পাশাপাশি সুপারমাকেটগুলোতে লম্বা লাইন দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে মজুদ করার চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষ।