গবেষণায় ছয় থেকে সাত বছর বয়সী শিশুদের একটি কল্পিত প্রশ্ন-উত্তর খেলায় কারসাজি করার সুযোগ দিয়ে তা নিয়ে মিথ্যা বলতে দেয়া হয়।
গবেষণার দ্বিতীয় অংশে ওই শিশুদের স্মৃতিশক্তির পরীক্ষা নেয়া হয়। সেখানে দেখা যায়, যেসব শিশু গুছিয়ে মিথ্যা বলেছে তারা স্মরণশক্তির পরীক্ষায় ভাল করেছে।
‘জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল চাইল্ড ফিজিওলজি’তে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ পায়।
গবেষণার জন্য নর্থ ফ্লোরিডা, শেফিল্ড এবং স্টির্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যুক্তরাজ্যের চারটি বিদ্যালয় থেকে ১১৪টি শিশুকে নির্বাচন করে।
শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এলেনা হইকা বলেন, “কেন কিছু শিশু তার বয়সী অন্যদের তুলনায় বেশি মিথ্যা কথা বলে সেটা জানতে পেরে আমি চমৎকৃত।”
প্রশ্ন-উত্তর পর্বের খেলার সময় গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে গবেষকরা ওই শিশুদের আলাদা করতে পেরেছেন যারা উঁকি মেরে আগে উত্তর দেখে নিয়েছে। যদিও তাদের উত্তর দেখতে নিষেধ করা হয়েছিল।
অংশগ্রহণকারী শিশুদের মাত্র এক-চতুর্থাংশ শিশু উঁকি মেরে উত্তর দেখেছিল।
এরপর তাদের এমন কিছু প্রশ্ন করা হয়, যায় মাধ্যমে গবেষকরা কে ভাল মিথ্যা বলে এবং কে মিথ্যা বলতে পারে না সেটি আলাদা করে নিয়েছিলেন।
পরে স্মৃতিশক্তির পরীক্ষায় দেখা যায়, যে সব শিশু গুছিয়ে মিথ্যা বলেছিল শব্দ মনে রাখার পরীক্ষায় তারা ভাল করছে। তবে ছবি মনে রাখার পরীক্ষায় তাদের অন্য শিশুদের তুলনায় ভাল করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর কারণ হিসেবে গবেষকরা বলেন, মিথ্যা বলতে হলে অনেক মৌখিক তথ্য মনে রাখতে হয়। কিন্তু ছবি মনে রাখার ক্ষেত্রে সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ড. হইকা বলেন, “মিথ্যা বলায় ওস্তাদ শিশুদের বাবা-মায়েরা হতাশ থাকেন।”
কারণ, তিনি বলেন, “সাধারণত বাবা-মা শিশুর মিথ্যা বলার বিষয়টি মেনে নিতে পারেন না। তবে তারা এখন অন্তত এটা ভেবে খুশি হতে পারেন যে, তাদের শিশু গুছিয়ে মিথ্যা বলার মানে হচ্ছে, তাদের শিশুর অন্য শিশুদের তুলনায় কল্পনাশক্তি বেশি এবং স্মৃতিশক্তিও ভাল।”
শিশুরা কখন প্রথম মিথ্যা বলা শেখে এখন সেটিই জানার চেষ্টা করছেন গবেষকরা।