বিশ্বে স্থূলতায় শীর্ষ ১০দেশের ৯টিই প্রশান্ত মহাসাগরে

‘স্থূলকায় মানুষের দেশ’ এর কথা বললেই পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্রের কথা মনে এলেও স্থূলতার হার সবচেয়ে বেশি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। বিশ্বে স্থূলতার হারের দিক থেকে শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে ৯টিই এ অঞ্চলের দ্বীপদেশ।

>>আইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2015, 11:44 AM
Updated : 13 May 2015, 11:44 AM

তালিকায় সবার ওপরে আছে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের কুক দ্বীপপুঞ্জ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)  দেয়া পরিসংখ্যানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের গণমাধ্যম খবরটি প্রকাশ করে।

ডব্লিউএইচও’র ‘প্যাসিফিক হেল্থ সিস্টেমস অ্যান্ড পলিসি’ টিমের প্রধান জেকিল নুকুরো  নিউজিল্যান্ড বেতারে বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতে মারাত্মক স্বাস্থ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে এবং তা দিন দিন বাড়ছে।

অঞ্চলটিতে স্থূলতা মহামারি আকার ধারণ করেছে। মানুষ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশনের মতো অসুখে ভুগছে। প্রতি চারটির মধ্যে তিনটি মৃত্যুর কারণই এসব রোগ।

ডব্লিউএইচও’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কুক দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ স্থুলকায়। পালাউ ও নাউরুতে ৪৫ শতাংশ এবং সামোয়া, টোঙ্গা ও নিয়ুতে ৪৩ শতাংশ মানুষ অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভূগছে।

মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে স্থূলতার হার ৪২ শতাংশ। কাতারেও এ হার বিরাজ করছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর বাইরে একমাত্র কাতারই শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় ১০ নাম্বারে আছে।  এছাড়া, কিরিবাতি ও তুভালুতে স্থূলতার হার ৪০ শতাংশ।

নুকুরোর মতে, ধূমপান, মদ্যপান, কায়িক পরিশ্রম কম করা- এসব কারণেই এ অঞ্চলের মানুষ স্থূলকায় হচ্ছে।

এছাড়াও ডব্লিউএইচও’র স্বাস্থ্য বিষয়ক বুলেটিনে বলা হচ্ছে, প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপদেশগুলো তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার ছেড়ে আমদানি করা এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়ায় স্থূলতা জেঁকে বসছে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীরা প্রকৃতিগতভাবেই সহজে মোটা হয় বলে ধারণা করা হলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এজন্য পশ্চিমা ধাঁচের খাবারই মূলত দায়ী।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই প্রশান্ত মহাসাগরের অধিকাংশ দ্বীপে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাব বেড়েছে। তারা দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীদের আমদানি করা খাবারে উৎসাহ যোগাচ্ছে। ফলে এসব দ্বীপে আগের মাছ ও কৃষি শিল্প বিলীন হয়ে মোটা মানুষের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

কাঁচা মাছ, মাংস এবং স্থানীয় ফল-সবজি প্রভৃতি ঐতিহ্যবাহী খাবারের পরিবর্তে দ্বীপ দেশগুলোতে চাল, চিনি, ময়দা,  টিনজাত বিভিন্ন খাবার এবং বিয়ার ব্যাপকহারের চালু হয়েছে। এসব উচ্চ শক্তি ও নিম্ন পুষ্টির খাবারই মূলত সেখানকার অধিবাসীদের মুটিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ, বলছেন গবেষকরা।