সরকারের সমালোচনায় বন্যা

লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ‘যথেষ্ট উদ্যোগী’ না হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের সমালোচনা করেছেন তার স্ত্রী একই হামলায় আহত রাফিদা আহমেদ বন্যা।

>>রয়টার্স
Published : 11 May 2015, 04:31 PM
Updated : 3 July 2015, 01:52 PM

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা সংলগ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে হামলা হয় অভিজিৎ ও বন্যার উপর। হামলাকারীদের চাপাতির আঘাতে নিহত হন অভিজিৎ।

হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও এক আঙুল হারান বন্যা। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান।

অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর আড়াই মাস পেরুলেও এখনও জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ড তদন্তে তারা যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের সহায়তাও নিচ্ছে।

২৫ এপ্রিল লেখক ও ব্লগার বন্যা ব্যান্ডেজ বাঁধা বাহু ও একটি আঙুল হারানো হাত নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে এসে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

“এটা ছিল পরিকল্পিত- জঙ্গিবাদের বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডের অংশ। কিন্তু যেটাতে আমি সবচেয়ে বেশি বেদনাহত, তা হলো এখনও বাংলাদেশ সরকারের কেউ আমার কাছে আসেনি।”

“মনে হচ্ছে যেন, আমার অস্তিত্বই নেই এবং তারা উগ্রপন্থিদের ভয়ে ভীত। বাংলাদেশ কি পরবর্তী পাকিস্তান বা আফগানিস্তান হচ্ছে?”

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা না হলেও এফবিআইয়ের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি যোগাযোগ করেছেন বলে জানান বন্যা।

বন্যা আহমেদ বলেন, শুক্রবার ওয়াশিংটনে এফবিআইয়ের কয়েকজন এজেন্ট তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

সাক্ষাৎকারে অভিজিতের সঙ্গে পরিচয় ও সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন বন্যা।

২০০২ সালে ব্লগে ধর্ম নিয়ে বন্যার লেখা একটি পোস্ট নিয়ে সিঙ্গাপুরে বসবাসরত অভিজিৎ তার পক্ষ নিলে পরিচয়ের শুরু হয়। এরপর অভিজিৎ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমালে তারা বিয়ে করেন।

ব্লগের লেখালেখি নিয়ে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হুমকির মুখেই বইমেলায় অংশ নিতে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় ফেরেন প্রবাসী এই দুই বাংলাদেশি।

বন্যা বলেন, “আমরা জানতাম ওই রকম একটা দেশে যে কোনো কিছু ঘটতে পারে এবং আমরা সতর্কও ছিলাম। তাকে একটা হুমকি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা ওটাকে অতটা গুরুত্ব দেইনি। তা না হলে আমরা যেতামই না।”

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা এখনো কোনো কূল-কিনারা করতে পারেননি। এর মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের আল কায়েদার প্রধান আসিম উমর একটি ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশে অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব স্বীকার করেন।

এই প্রেক্ষাপটে বন্যা বলেন, “আমরা আগে যা ভেবেছিলাম, এখন দেখি ঘটনা তার থেকেও বেশি ভীতিকর।”