শনিবার ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কাঠমান্ডু। পরদিন ভূমিকম্প পরবর্তী পরাঘাতে আবারও ভয়ঙ্করভাবে কেঁপে ওঠে নেপাল। ওই দিন ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭।
ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৭০০ ছাড়িয়েছে। রাজধানীতে খাবার ও পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু পাহাড়ি এলাকায় যোগাযোগ করাই সম্ভব হয়নি। ফলে সেখানে হতাহতের পরিমাণ সম্পর্কে খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নিহতের সংখ্যা পাঁচ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে।
সোমবার দেখা যায়, কাঠমান্ডু থেকে বেরবার প্রধান সড়কগুলোতে মানুষের প্রচণ্ড ভীড়। অনেকের সঙ্গেই শিশু সন্তান ছিল। তারা বাস, গাড়ি বা ট্রাকে ওঠার চেষ্টা করছে।
কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও বিশাল বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে পর্যটক ও নেপালের অধিবাসীরা ফ্লাইট ধরার অপেক্ষা করছেন।
শনিবারের ভূমিকম্পের পর থেকে কাঠমান্ডুর ১০ লাখ অধিবাসীর অধিকাংশই খোলা জায়গায় অবস্থান করছে। হয় তাদের বসতবাড়ি ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে বা যাদেরটা টিকে আছে তারা পরাঘাতের ভয়ে বাড়ি যাচ্ছে না।
মহাসড়কের পাশে যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা কাঠমান্ডুর মুদি দোকানী কৃষ্ণা মুক্তারি বলেন, “আমরা পালিয়ে যাচ্ছি। এখানে কিভাবে বসবাস সম্ভব? আমার বাচ্চা-কাচ্চা আছে, তাদের পক্ষে সারারাত বাড়ির বাইরে থাকা সম্ভব নয়।”
ওদিকে, ভূমিকম্পের পর কাঠমান্ডুতে পানি, খাবার ও বিদ্যুৎ সঙ্কটের পাশাপাশি রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও দিন দিন বাড়ছে। নেপাল কর্তৃপক্ষ সঙ্কট মোকাবেলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। সেইসঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক সাহায্যও কামনা করছে।
নেপালের প্রধান সচিব লিলা মনি পাউদেল বলেন, “এখন সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় হচ্ছে ত্রাণ।”
“আমরা বিদেশি দেশগুলোর কাছে বিশেষ ধরনের ত্রাণ সামগ্রী এবং চিকিৎসক দল পাঠানোর অনুরোধ করেছি। দেশের এই দুর্যোগময় পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা অধীর আগ্রহে বিদেশি সাহায্যের অপেক্ষায় আছি।”
কাঠমান্ডুর হাসপাতালগুলোতে অসুস্থ ও আহত মানুষের উপচে পড়া ভীড়, লোকজন রাস্তার পাশে পরিবার নিয়ে অবস্থান করছে, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহ করছে।
অল্প কিছু দোকান খোলা আছে তবে সেগুলোতে খুব সামান্য জিনিস অবশিষ্ট আছে।