নেপালে নিহতের সংখ্যা ৩,৭০০ ছাড়িয়েছে

শক্তিশালী পরাঘাতের মধ্যে আতঙ্ক নিয়ে তাঁবু আর খোলা আকাশের নিচে আরেকটি রাত কাটিয়েছেন ভূমিকম্প বিধ্বস্ত নেপালের বাসিন্দারা। শনিবারের ওই ভূমিকম্পের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা তিনহাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2015, 03:42 AM
Updated : 27 April 2015, 11:10 AM

সরকার সোমবার মোট ৩ হাজার ৭২৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। এর বাইরে আহত হয়েছে আরো অন্তত সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ। মৃতের সংখ্যা ৫ হাজারে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাজধানী কাঠমান্ডুতে ঘর হারানো মানুষের ঠাঁই হয়েছে শহরজুড়ে তৈরি হওয়া ‘তাঁবুর শহরে’। ফের ভূমিকম্পের আতঙ্কে তারা নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতেও ফিরতেপারছেন না বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

উদ্ধারকর্মীরা রোববারও রাতভর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। নেপাল সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে পৌঁছাতে শুরু করেছেত্রাণ ও সহায়তা। 

কিন্তু ৮০ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম এই ভূমিকম্পের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে উদ্ধার ও ত্রাণকর্মীদের। ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে উদ্ধার করাগেলেও আহত বহু মানুষকে হাসপাতালে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হয়নি।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের অনেককেই জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজের খোলা মাঠে তাঁবু খাটিয়েতার ভেতরে অপারেশন টেবিলে কাজ করছেন চিকিৎসকরা। 

হিমালয়ের কোলে ২ কোটি ৭০ লাখ মানুষের এই দেশে রাজধানীর বাইরে প্রতন্ত এলাকার পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ সে চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়। বিদ্যুৎ ওযোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ায় ঠিকমতো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক আর পথ আগলে থাকা ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে কিছু এলাকায় পৌঁছাতেউদ্ধারকর্মীদের সময় লাগছে।

নেপালের কাঠমান্ডু এবং পোখরা নগরীর মাঝে শনিবার দুপুরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকাও কেঁপে উঠে।এরপর  রোববার পর্যন্ত তিন দফায় আরো  তিনটি মাঝারি মাত্রার পরাঘাত অনুভূত হয়, যার মধ্যে একটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৭।

শনিবারের ভূমিকম্পে ভবন ধসে, দেয়ালচাপা পড়ে এবং হুড়োহুড়িতে ভারত, চীন, তিব্বত ও বাংলাদেশে আরো কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

নেপালের পশ্চিম অংশের দুর্গম পার্বত্য এলাকার সঠিক পরিস্থতি জানা গেলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বরে ধারণা করা হচ্ছে।

নেপালে ভূমিকম্প দুর্গতদের সহায়তার জন্য একটি বিশেষ দল পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউএসএইড প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ ডলার দিয়েছে। নরওয়ে দিচ্ছে ৩৯লাখ ডলার।

প্রতিবেশী দেশ ভারত কয়েকটি হেলিকপ্টারে করে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল এবং ৪০ জন উদ্ধারকর্মীকে কাঠমান্ডু পাঠিয়েছে, তাদের সঙ্গে রয়েছেউদ্ধারকাজে প্রশিক্ষিত কুকুর। চীনের একটি উদ্ধারকারী দলও ইতোমধ্যে নেপালে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশের বিমান বাহিনীর একটি দল ত্রাণ ও ওষুধ নিয়ে রোববারই নেপালে পৌঁছেছেন। সেনাবাহিনীর চিকিৎসকরাও রয়েছেন এই দলে। পাকিস্তানও চারটি বিমানেকরে চিকিৎসক, খাবার, তাঁবু ও কম্বল পাঠিয়েছে।

এছাড়া, জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স, ইসরায়েল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই দুর্যোগে নেপালের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।