একটি মাউন্টেইন বাইকিং দলের গাইড হিসেবে কাজ শেষ করে মাত্র কাঠমান্ডুতে নিজ বাড়ি ফিরেছেন নাবা রাজ আমগি। এসময় শুরু হয় ভূমিকম্প।
আমগি ও তার স্ত্রী সিঁড়ির দিকে ছুটে যান। তার প্রতিবেশীরাও ততক্ষণে রাস্তার দিকে ছুটছেন, চিৎকার করছেন এবং কাঁদছেন।
ভূমিকম্প শেষ হওয়ার কয়েকঘণ্টা পরও ভয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।
“পরিস্থিতি ছিল ভয়ঙ্কর। আতঙ্কে এখনও আমি বাড়ির ভেতর যেতে পারছি না।”
৬০ বছর বয়সী সবজি বিক্রেতা হরি অধিকারী বলেন, “আমার পায়ের নিচের মাটি ভীষণভাবে দুলছিল। আমার মনে হচ্ছিল আমি মাটির নিচে তলিয়ে যাচ্ছি।”
শনিবার দুপুরে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী কাঠমান্ডুর পশ্চিমাঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ভূমিকম্পে বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকাও কেঁপে উঠে। ভারতে অন্তত ৩৬ জন, তিব্বতে ১২ জন এবং বাংলাদেশে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ওই সময়ের পরিস্থতি বর্ণনা করে রয়টার্সের এক সাংবাদিক বলেন, “অনেক ভবন ধসে পড়ে, সবাই তখন নেমে এসেছিল পথে। অনেকে ছুটতে থাকে হাসপাতালের দিকে।”
পর্যটনের জন্য সুপরিচিত দেশ নেপালে বর্তমানে তিন লাখ বিদেশি অবস্থান করছিলেন বলে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয় জানায়।
এদেরই একজন ভারতের দেবযানী পান্থ, যিনি তখন বসে ছিলেন কাঠমান্ডুর একটি কফি শপে।
“হঠাৎ টেবিল কাঁপতে থাকল, দোকানের দেয়ালটি ধসে পড়ল, আমরা বেরিয়ে এলাম বাইরে,” রয়টার্সকে বলেন তিনি।
বেড়াতে গিয়ে এখন ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া কাজে লেগে পড়েছেন ভারতীয় এই নারী।
কাঠমান্ডুতে এখনও মানুষ জন রাস্তায় অবস্থান করছে। তাদেরকে এখনই বাড়িতে না ফেরার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অনেকেই অস্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছেন।
পাটানে একটি স্কুলের খেলার মাঠে প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গতদের মধ্যে চা ও পানি বিতরণ করছে।
এখানে আশ্রয় নেয়া ইরা লামা রয়টার্সকে বলেন, তিনি কাঠমান্ডুতে একটি ঘর ভাড়া করে থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি আশ্রয় কেন্দ্র থেকে খুব বেশি দূরে নয়। কিন্তু ভূমিকম্পে তার গ্রামের বাড়িও ধসে পড়েছে।