আল-কায়েদার প্রচারবিভাগের শীর্ষনেতা নিহত

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার প্রচারণা বিভাগের নেতৃত্বদানকারী যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনা জঙ্গি এই সংগঠনটির ওপর বড় এক আঘাত।

>>রয়টার্স
Published : 25 April 2015, 05:35 AM
Updated : 25 April 2015, 05:35 AM

অ্যাডাম গাদান নামে নিহত ওই আল-কায়েদা নেতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম দিকে আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানে আল-কায়েদার গোপন আস্তানায় এক অভিযানে তিনি নিহত হন বলে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছে।

পাকিস্তানি লেখক ও তালেবান গোষ্ঠী এবং আল-কায়েদার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ আহমেদ রাশিদ বলেন, “তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। তিনি ছিলেন তাদের (আল-কায়েদা) প্রচারণা সেলের সম্মুখভাগে।”

তিনি আরো বলেন, “গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইএসআইএসের (ইসলামিক স্টেট) সাফল্যের এই সময়ে তাকে ভীষণ দরকার ছিল। বিশেষ করে ইংরেজিভাষীদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ওয়েবসাইটসহ আরো অনেক ক্ষেত্রেই।”

গাদানকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে রেখেছে। ত্রিশোর্ধ বয়সী গাদান যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনে জন্মগ্রহণ করেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় বেড়ে ওঠেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি ইসলামধর্ম গ্রহণ করেন এবং এরপর তিনি আল-কায়েদার মুখপাত্র এবং অনুবাদক হিসেবে কাজ করেন।

২০০৬ সালে গাদানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিভাগের সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনিই প্রথম ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনা হয়।

গাদান আল-কায়েদার আস-শাহাব মিডিয়া উইংয়ে কাজ করতেন।

পাকিস্তানের জঙ্গি-বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ওপর গ্রন্থ প্রণয়নকারী আমির রানা বলেন, “আল-কায়েদার হয়ে কথা বলার জন্য তিনি ছিলেন প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি। আর এ কারণে সংগঠনটির প্রোপাগান্ডার ক্ষেত্রে তার মৃত্যু বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানে আল-কায়েদার একটি আস্তানায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র চালক বিহীন বিমান (ড্রোন) হামলা চালায়। ওই হামলায় আল-কায়েদার হাতে অপহৃত যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক ও ইতালির একজন নাগরিকসহ বেশ কয়েকজন নিহত হন।

ওই হামলার পাঁচদিন পর অন্য একটি আস্তানায় যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় গাদান নিহত হন।

পাকিস্তানের একজন তালেবান সদস্য জানিয়েছেন, মার্কিন ড্রোন হামলার কারণে এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় গাদানের অনুচর ও সহযোগিরা তাকে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা শোনেননি।

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটির ইমতিয়াজ গুল বলেন, “জঙ্গি সংগঠন আইএসের (ইসলামিক স্টেট) কাছে আল-কায়েদা গেল বছর থেকে এখনো পর্যন্ত ক্রমশ হেরে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাদের (আল-কায়েদা) নতুন পরিকল্পনার প্রয়োজন টিকে থাকার স্বার্থে। ধারণা করা যায়, গাদান ছিলেন সেই পরিকল্পনারই অংশ।”