তুরস্কে আদালতে ঢুকে কৌঁসুলিকে জিম্মি

তুরস্কের কট্টর-বামপন্থি একটি দল আদালতে ঢুকে ইস্তাম্বুলের একজন কৌঁসুলিকে জিম্মি করেছে এবং দাবি পূরণ করা না হলে ওই কৌঁসুলিকে হত্যার হুমকি দিয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2015, 04:23 PM
Updated : 31 March 2015, 04:23 PM

মঙ্গলবার ওই কৌঁসুলিকে জিম্মি করা হয়। দ্য ‘রেভল্যুশনারি পিপলস লিবারেশন পার্টি-ফ্রন্ট’(ডিএইচকেপি-সি) তাদের হাতে জিম্মি কৌঁসুলির একটি ছবি প্রকাশ করেছে।

ছবিতে মুখের অর্ধেকটা কাপড়ে ঢেকে রাখা একজন বন্দুকধারী ওই কৌঁসুলির মাথায় বন্দুক ধরে আছে। ১২:৩৬ জিএমটিতে তাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে দলটি।

ইস্তাম্বুলের পুলিশ প্রধান সেলামি আলটিনক বলেন, মধ্যস্থতাকারীরা দুই বন্দুকধারীর সঙ্গে কথা বলছে। যদিও এরই মধ্যে তাদের বেঁধে দেয়া সময় পেরিয়ে গেছে।

“কোন ধরনের রক্তপাত ছাড়াই আমরা এ ঘটনা শেষ করার চেষ্টা করছি। মধ্যস্থতাকারীরা হামলাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছে।”

টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, বিশেষ বাহিনী আদালত ভবনে প্রবেশ করেছে এবং কর্মকর্তাদের বাইরে বের করে নিয়ে যাচ্ছে। অস্ত্রধারী পুলিশ বাহিনী পুরো ভবন ঘিরে ফেলেছে। দমকল বাহিনীর গাড়িও ভবন ঘিরে অবস্থান নিয়েছে।

গত বছর মার্চে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলার সময় ১৫ বছর বয়সী কিশোর বেরকিন এলভান পুলিশের ছোঁড়া টিয়ার গ্যাসের শেলে মাথায় গুরুতর আঘাত পায় এবং কোমায় চলে যায়। প্রায় নয় মাস কোমায় থাকার পর এলভান মারা যায়। জিম্মি কৌঁসুলি মেহমেত সেলিম কিরাজের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল এলভানের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।

ডিএইচপি-সি তাদের ওয়েবসাইটে এলভানের ‍মৃত্যুর জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাকে টেলিভিশনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার দাবি জানিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মেহমেত হাসান কাপলান রয়টার্সকে বলেন, হামলাকারীরা আদালত ভবনে ঢোকার পর তিনি গুলির আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন।

“আমরা সাত তলায় ছিলাম। স্যুট পরা কালো রংয়ের চুলের এক ব্যক্তি কৌঁসুলির কক্ষে প্রবেশ করেন এবং তিনবার গুলি চালান।”

কাপলান ওই ভবনেই কাজ করেন। হামলাকারীরা তাদের কাছে বিস্ফোরক দ্রব্য রয়েছে দাবি করেছে বলেও জানান তিনি।

ওদিকে, এ ঘটনার পর ট্যুইটারে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। সেখানে এক ব্যক্তিকে এলভানের পিতা সামি এলভান বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে।

সামি এলভান কৌঁসুলির ক্ষতি না করার জন্য ডিএইচকেপি-সি দলের প্রতি আহ্বান জানান।

“আমরা ন্যায় বিচার চাই। আমরা চাই না আর কারও এক ফোঁটা রক্তও ঝরুক। আমরা আর কোন মা’কে কাঁদতে দেখতে চাই না।”

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তুরস্ক ডিএইচকেপি-সি কে সন্ত্রাসীদের সংগঠন হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছে।

এই দলটিই ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছিল।