নাইজেরিয়ায় নির্বাচনীকালীন সহিংসতায় নিহত ১৫

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চলাকালীন বন্দুকধারীদের গুলিতে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাসহ অন্ততপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। 

রয়টার্স
Published : 29 March 2015, 08:11 AM
Updated : 29 March 2015, 08:11 AM

শনিবার শুরু হওয়া দেশটির এই জাতীয় নির্বাচন প্রত্যাশিতভাবেই দ্বিতীয় দিন রোববার পর্যন্ত গড়িয়েছে। 
 
১৯৯৯ সালে দেশটিতে সামরিক শাসন অবসান হওয়ার পর থেকে এবারই সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে। এবারই প্রথমবারের মতো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথনকে পরাজিত করার মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক সামরিক শাসক মুহাম্মাদু বুহারি।  
 
দক্ষিণাঞ্চলীয় খ্রিস্টান প্রার্থী ও উত্তরাঞ্চলীয় মুসলিম প্রার্থী বুহারির প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে কেন্দ্র করে দেশটি নৃগোষ্ঠীগতভাবে, আঞ্চলিকভাবে ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ায় নির্বাচনকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। 
 
উত্তেজনাপূর্ণ এই পরিস্থিতি যে কোনো সময় সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, পাশাপাশি বোকো হারামের বিদ্রোহকবলিত উত্তরপূর্বাঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলার আশঙ্কাও ছিল। 
 
শনিবার নির্বাচন চলাকালে দুটি আশঙ্কাই সত্যে পরিণত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জায়গায় ভোটারদের লক্ষ করে হামলা চালিয়েছে বোকো জঙ্গিরা। এতে ইয়োবে রাজ্যে তিনজন ও গোম্বে রাজ্যে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। 
 
গোম্বের ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর রাজ্যটির এক ভোট কেন্দ্রের কাছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে এক বিরোধীদলীয় নেতাসহ অন্ততপক্ষে আটজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বুহারির অল প্রগ্রেসিভ কংগ্রেসের (এপিসি) একজন মুখপাত্র। 
 
ধর্মীয়ভাবে মিশ্র দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে একটি শরিয়াভিত্তিক কট্টর ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে বোকো হারাম। গোষ্ঠীটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভোট দিতে গেলে ভোটারদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন গোষ্ঠীটির নেতা আবুবকর শেকাউ। 
 
তবে সম্প্রতি জঙ্গি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা নাইজেরিয়া, প্রতিবেশী চাদ, ক্যামেরুন ও নাইজারের সম্মিলিত বাহিনী বোকো হারামের দখল করা অধিকাংশ এলাকা মুক্ত করেছে। তবে এরপরও বেসামরিক লোকজনের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালানোর সামর্থ্য আছে গোষ্ঠীটির। 
 
এসব কিছুর পরও দেশজুড়ে ১,২০,০০০ ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সময় ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন ভোটাররা। জাল ভোট ঠেকাতে উচ্চ প্রযুক্তির মেশিনে পাঠযোগ্য পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হয়েছে। 
 

তবে এসব মেশিনের বিভিন্ন সমস্যা ও অকেজো হয়ে পড়ায় ভোট গ্রহণে বিলম্ব ও বিভিন্ন বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জোনাথনের আঙ্গুলের ছাপ সনাক্ত করতে ৪০ মিনিট দেরি হয়েছে।
এরপরও নির্বাচনের বিষয়ে তিনি খুব “আশাবাদী” বলে জানিয়েছেন। 
প্রাযুক্তিক সমস্যার কারণে ৫ কোটি ৬৭ লাখ ভোটারের ভোট গ্রহণ একদিনে শেষ করা যায়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার পর্যন্ত ভোট গ্রহণের সময়সীমা বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে নির্বাচন রোববার পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে আগেই ধারণা করা হচ্ছিল। ইচ্ছুক ভোটারদের ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভোট চলার ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিল নির্বাচন কমিশন।  
ভোট গ্রহণ রোববার পর্যন্ত বাড়ানোর কারণে ভোটের ফলাফল প্রকাশ করার তারিখ নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।